কামরানের বাসায় আরিফুল, বের হলেন হাত ধরে

Looks like you've blocked notifications!
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এগিয়ে থাকা বিএনপিদলীয় মেয়র পদপ্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর হাতে হাত ধরে আছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। ছবিটি আজ মঙ্গলবার বিকেলে কামরানের বাসার সামনে থেকে তোলা। ছবি : এফএনএস

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এগিয়ে থাকা বিএনপিদলীয় মেয়র পদপ্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের বাসায় গিয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। আজ মঙ্গলবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে নগরীর ছড়ারপাড় এলাকায় কামরানের বাসায় যান তিনি।

খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে গণমাধ্যমের কর্মীরা ওই বাসায় যেতে যেতেই আরিফুল হক চৌধুরী বের হয়ে যান। এই নিয়ে একটি ভিডিও পাওয়া গেছে। এতে দেখা যায়, দুই নেতা হাত ধরে বাসা থেকে বের হচ্ছেন।   

সাক্ষাতের বিষয়টি স্বীকার করে আরিফুল হক চৌধুরী জানান, তিনি বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের কাছে সিটি করপোরেশনের উন্নয়নের বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা চেয়েছেন। কামরান তাঁকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন।

এ বিষয়ে বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

গতকাল সোমবার সিলেট সিটি করপোরেশনে (সিসিক) ভোট গ্রহণের সময় গোলযোগের কারণে স্থগিত করা হয় দুটি কেন্দ্রের ভোট। এই দুই কেন্দ্রে পুনরায় ভোট গ্রহণ করা হবে কি না, সে বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন সিসিক নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলীমুজ্জামান। তাই ১৩২টি কেন্দ্রে এগিয়ে থেকেও অপেক্ষা করতে হবে আরিফুল হককে।

সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসের ফল ঘোষণার কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত ১৩২টি কেন্দ্রের মধ্যে আরিফুল হক চৌধুরী পেয়েছেন ৯০ হাজার ৪৯৬ ভোট এবং নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান পেয়েছেন ৮৫ হাজার ৮৭০ ভোট।

সেই হিসাবে আরিফুল হক চৌধুরী সিসিক নির্বাচনে ১৩২টি কেন্দ্রে চার হাজার ৬২৬ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। অপরদিকে, স্থগিত হওয়া দুটি কেন্দ্রের মোট ভোটার চার হাজার ৭৮৭। নির্বাচনী এই হিসেবে বিজয় নিশ্চিত করার জন্য আরো ১৬১টি ভোট প্রয়োজন আরিফুল হকের।

গতকাল সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান দাবি করেছিলেন। কিন্তু ভোটের ফল প্রকাশের একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর ভোটের ফল ঘোষণা স্থগিতের আবেদন করেন।

আবেদনে মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগের এজেন্টদের মাধ্যমে পাওয়া ফলাফলের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত ফলাফলে ১০-১৫ হাজার ভোটের ব্যবধান রয়েছে। তাই ফল ঘোষণা বন্ধ রেখে পুনর্গণনা করার অবেদন করা হয়েছে।

অন্যদিকে, বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আরিফুল সোমবার দিনভর জাল ভোট এবং কেন্দ্র দখলের অভিযোগ করেছিলেন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

এদিকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে সিসিক নির্বাচনের স্থগিত হয়ে যাওয়া দুটি কেন্দ্রে পুনরায় ভোট গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. রফিকুল ইসলাম।

আজ মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সিলেট সিটি নির্বাচনের পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা এই কমিশনার এনটিভি অনলাইনকে এ কথা বলেন।

রফিকুল ইসলাম বলেন, নতুন করে ব্যালট পেপার ছাপানোসহ নির্বাচনের জন্য প্রক্রিয়াগত যত কাজ আছে আশা করছি, আগামী ১০ দিনের ভেতরে সব শেষ হয়ে যাবে। তার পরেই পুনরায় নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হবে।

নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, সেহেতু সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্থগিত হয়ে যাওয়া দুটি কেন্দ্রের জন্য মেয়রদের ফলাফলই আটকে আছে, সেহেতু নির্বাচন দ্রুতই সম্পন্ন করা হবে। নির্বাচনের পরে ওই দুটি কেন্দ্রে কী হয়েছিল, তার তদন্ত করা হবে।