ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনবেন আ. লীগের কামরান!

Looks like you've blocked notifications!
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আজ মঙ্গলবার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। ছবি : এনটিভি

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনিয়ম ও জালভোটের অভিযোগ তুলে ১৭ থেকে ১৮টি কেন্দ্রে পুনরায় ভোট গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নির্বাচন পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি কামরান বলেন, প্রয়োজনে সাধারণ মানুষ এ দাবি আদায়ের জন্য রাজপথে আন্দোলনে নামবে। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তাঁরা তাঁদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনবে। তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফুল হকের বাড়ির পাশের কেন্দ্রে কতিপয় যুবক নৌকার নৌকার ব্যাজ ঝুলিয়ে ধানের শীষে ভোট দিয়েছেন।

নগরীর ১৭ থেকে ১৮ কেন্দ্রে অনিয়ম, কেন্দ্র দখল করে জালভোটের অভিযোগের কথা তুলে কামরান বলেন, নগরীর যে কয়টি কেন্দ্র নিয়ে এ রকম গুরুতর অভিযোগ রয়েছে ইতিমধ্যে আমরা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে বলেছি যে আমরা এসব কেন্দ্রে পুনরায় নির্বাচন চাই। সেই সঙ্গে যেসব কেন্দ্রে গোলাগুলি হয়েছে, পুলিশ গুলি করতে বাধ্য হয়েছে, আমরা গোলযোগপূর্ণ সেই কেন্দ্রগুলোর ফলাফল মানি না।

গতকাল সোমবার সিলেট সিটি করপোরেশনে (সিসিক) ভোট গ্রহণের সময় গোলযোগের কারণে স্থগিত করা হয় দুটি কেন্দ্রের ভোট। এই দুই কেন্দ্রে পুনরায় ভোট গ্রহণ করা হবে কি না, সে বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন সিসিক নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলীমুজ্জামান। তাই ১৩২টি কেন্দ্রে এগিয়ে থেকেও অপেক্ষা করতে হবে আরিফুল হককে।

সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসের ফল ঘোষণার কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত ১৩২টি কেন্দ্রের মধ্যে আরিফুল হক চৌধুরী পেয়েছেন ৯০ হাজার ৪৯৬ ভোট এবং নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান পেয়েছেন ৮৫ হাজার ৮৭০ ভোট।

সেই হিসাবে আরিফুল হক চৌধুরী সিসিক নির্বাচনে ১৩২টি কেন্দ্রে চার হাজার ৬২৬ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। অপরদিকে, স্থগিত হওয়া দুটি কেন্দ্রের মোট ভোটার চার হাজার ৭৮৭। নির্বাচনী এই হিসেবে বিজয় নিশ্চিত করার জন্য আরো ১৬১টি ভোট প্রয়োজন আরিফুল হকের।

গতকাল সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান দাবি করেছিলেন। কিন্তু ভোটের ফল প্রকাশের একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর ভোটের ফল ঘোষণা স্থগিতের আবেদন করেন।

আবেদনে মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগের এজেন্টদের মাধ্যমে পাওয়া ফলাফলের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত ফলাফলে ১০-১৫ হাজার ভোটের ব্যবধান রয়েছে। তাই ফল ঘোষণা বন্ধ রেখে পুনর্গণনা করার অবেদন করা হয়েছে।

অন্যদিকে, বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আরিফুল সোমবার দিনভর জাল ভোট এবং কেন্দ্র দখলের অভিযোগ করেছিলেন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

এদিকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের স্থগিত হয়ে যাওয়া দুটি কেন্দ্রে পুনরায় ভোট গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. রফিকুল ইসলাম।

আজ মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সিলেট সিটি নির্বাচনের পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা এই কমিশনার এনটিভি অনলাইনকে এ কথা বলেন।

রফিকুল ইসলাম বলেন, নতুন করে ব্যালট পেপার ছাপানোসহ নির্বাচনের জন্য প্রক্রিয়াগত যত কাজ আছে আশা করছি, আগামী ১০ দিনের ভেতরে সব শেষ হয়ে যাবে। তার পরেই পুনরায় নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হবে।

নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, সেহেতু সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্থগিত হয়ে যাওয়া দুটি কেন্দ্রের জন্য মেয়রদের ফলাফলই আটকে আছে, সেহেতু নির্বাচন দ্রুতই সম্পন্ন করা হবে। নির্বাচনের পরে ওই দুটি কেন্দ্রে কী হয়েছিল, তার তদন্ত করা হবে।