বাস মালিক সমিতির নেতারা বললেন

ছাত্র-শ্রমিক মুখোমুখি নয়, নিরাপত্তার স্বার্থে বাস চলাচল বন্ধ

Looks like you've blocked notifications!
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর শনির আখড়ার চিত্র। ছবি : এনটিভি

ছাত্র ও শ্রমিকদের মুখোমুখি নয়। কেউ কারো বিরুদ্ধেও নয়। বরং নিরাপত্তার স্বার্থে বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে আবারও দাবি করেছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা।

আজ শনিবারও সারা দেশের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার বাস চলাচল বন্ধ থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিভি অনলাইনকে এমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির একাধিক নেতা।

রাজধানীতে বাসচাপায় দুই কলেজছাত্র নিহত হওয়ার প্রতিবাদে চলমান ছাত্র বিক্ষোভ ও বাস ভাঙচুরের কারণে সারা দেশের সব পথে আন্তজেলা বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে সারা দেশের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব ও এনা পরিবহনের মালিক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, রাস্তায় এখনো গাড়ি নিরাপদ নয়। এ কারণে শ্রমিকরা গাড়ি চালানো বন্ধ করে রেখেছে। রাস্তায় প্রাইভেটকার পর্যন্ত চলছে না। নিরাপত্তার অভাবে গাড়ি চালানো সম্ভব হচ্ছে না।

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর উত্তরা এলাকার চিত্র। ছবি : এনটিভি

সমিতির পক্ষ থেকে আপনারা আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কি না জানতে চাইলে এনায়েত উল্লাহ বলেন, নিরাপত্তার কারণে কোনো গাড়ি রাস্তায় চলাচল করতে পারছে না। প্রত্যেক জেলায় জেলায় নিজস্ব মালিকরাই গাড়ি চলাচল বন্ধ করে রেখেছে। আমরা সমিতির পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিনি।

কবে নাগাদ বাস চলাচল শুরু হবে জানতে চাইলে মহাসচিব বলেন, ছাত্ররা বাস ভাঙচুর করছে, তারা ভাঙচুর বন্ধ করুক। বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

অপরদিকে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ছাত্ররা ও শ্রমিকরা কেউ কারো মুখোমুখি নয়। ছাত্ররা আমাদেরই সন্তান। একইসঙ্গে শ্রমিকরাও আমাদের ভাই। প্রত্যেকে তাদের নিজস্ব দাবি নিয়ে আন্দোলন করছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত হলেই মালিকরা বাস চালানোর অনুমতি দিবে।’

আবুল কালামও দাবি করেন, বাস মালিকরা আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্বান্ত নেয়নি। তবে প্রত্যেকে নিজস্ব পরিবহন বন্ধ করে রেখেছে।

এদিকে রাজধানীর অভ্যন্তরীণ রুটগুলোতে আজও যাত্রীবাহী বাস নেই বললেই চলে। কেবল বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) কয়েকটি বাস চলছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত অপ্রতুল।

সড়কে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস চলাচল করছে।

বিভিন্ন গন্তব্যগামী শত শত মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন বা হাঁটছেন। মোটরসাইকেলে রাইড শেয়ারিং, রিকশা বা অটোরিকশা, বিআরটিসির বাসে বা যেভাবেই হোক গন্তব্যে যাওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা করছে তারা। রোকেয়া সরণি, মিরপুর রোড, সাত মসজিদ রোড, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, মানিক মিয়া এভিনিউ, প্রগতি সরণি, এলিফ্যান্ট রোড ঘুরে কোনো গণপরিবহন দেখা যায়নি।

গত ২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলার বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের বাসের চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হয়। এ ছাড়া আহত হয় বেশ কয়েকজন। নিহত শিক্ষার্থীরা হলো শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে এরই মধ্যে ২০ লাখ টাকার অনুদান দিয়েছেন।

এ ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় বিক্ষোভে ফেটে পড়ে শিক্ষার্থীরা। এরপর থেকে ঢাকার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোয় বাস চলাচল একেবারেই কমে যায়। এমনকি আন্তজেলা বাস চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নয়টি দাবি করেছে। তাদের সব দাবি মেনে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও বলেছেন, শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। এখন তাদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার উচিত বলে জানান তিনি।