পুলিশ দিল চকলেট, শিক্ষার্থীরা লাল গোলাপ

Looks like you've blocked notifications!
রাজশাহীতে শনিবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঠাণ্ডা পানি ও চকলেট বিতরণ করেন পুলিশ সদস্যরা। বিপরীতে তাদের সমর্থন জানানোর জন্য লাল গোলাপ দিয়ে পুলিশকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। ছবি : এনটিভি

শান্তিপূর্ণ সহবস্থানের কারণে রাজশাহীতে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঠাণ্ডা পানি ও চকলেট বিতরণ করেছে পুলিশ। বিপরীতে তাদের সমর্থন জানানোর জন্য লাল গোলাপ দিয়ে পুলিশকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

আজ শনিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত রাজশাহী মহানগরীর সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে অবস্থান নেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ সময় পুলিশ ও আন্দোলরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ এই সম্পর্কের সৃষ্টি হয়।

সকালে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেওয়ার পর জেলা প্রশাসক এস এম আবদুল কাদেরসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা সাহেব বাজার জিরোপয়েন্টে যান। তাঁরা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রতি সমর্থন দেন। তবে প্রধানমন্ত্রী নয় দফা দাবি মেনে নিয়েছে জানিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক।

এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানায়, তারা কেবল আশ্বাসের ভিত্তিতে ঘরে ফিরে যাবে না। তারা নিরাপদ সড়কের ব্যাপারে আইন পাস না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবে। কোনোভাবেই তারা আন্দোলন থেকে পিছপা হবে না।

এর পর পরই শিক্ষার্থীদের স্লোগানে স্লোগানে সাহেববাজার এলাকা মুখর হয়ে ওঠে। তারা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান দিতে থাকে। এ সময় তারা সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীদের স্মরণে কালোব্যাজ ধারণ করে বিক্ষোভ করে। স্লোগান মুখর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় সাহেব বাজার জিরোপয়েন্ট এলাকায় পুলিশী বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়। শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বহিরাগতরা এসে যেন কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা না করতে পারে, সে জন্য পুরো এলাকায় পাহারা বসায় পুলিশ।

এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহীতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে গতিরোধক বানানোর কাজ গত দুদিনে শেষ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণে অন্যান্য স্থানেও দ্রুত গতিরোধক স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

গত ২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলার বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের বাসের চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হয়। এ ছাড়া আহত হয় বেশ কয়েকজন। নিহত শিক্ষার্থীরা হলো শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব। এরপর থেকে শিক্ষার্থীরা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রাস্তায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছে। তারা যানবাহন ও চালকের লাইসেন্স তল্লাশি করছে।

সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে এরই মধ্যে ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র দিয়েছেন। নৌমন্ত্রী শাজাহান খানও প্রত্যেক পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা দিয়েছেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নয়টি দাবি করেছে। তাদের সব দাবি মেনে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও বলেছেন, শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। এখন তাদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার উচিত বলে জানান তিনি।

এরই মধ্যে গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক সমিতির নেতারা বলেছেন, নিরাপদ বোধ না করা পর্যন্ত তারা রাস্তায় বাস নামাবেন না। ফলে অঘোষিত ধর্মঘট চলছে। গতকাল থেকেই আন্তজেলা বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।