সেই রোজ গার্ডেন কিনবে সরকার

Looks like you've blocked notifications!
ঐতিহ্যবাহী রোজ গার্ডেন। ছবি : সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের ‘জন্মস্থান’ হিসেবে খ্যাত পুরান ঢাকার হৃষিকেশ রোডে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী রোজ গার্ডেন কিনবে সরকার। ব্যক্তি মালিকানাধীন এ বাড়িটি কিনতে সরকারের ব্যয় হবে ৩৩১ কোটি ৭০ লাখ দুই হাজার ৯০০ টাকা। সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ বাড়িটি কেনার প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে আজ বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

পরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন’ অনুসারে সরকার ‘সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে’ বর্তমান মালিকদের কাছ থেকে রোজ গার্ডেন কিনবে।

বাংলা উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়, ১৯৩১ সালে ঋষিকেশ দাস নামের এক ধনাঢ্য ব্যবসায়ী পুরান ঢাকার ঋষিকেশ রোডে ২২ বিঘা জমির ওপর একটি বাগানবাড়ি তৈরি করেন। বাগানে প্রচুর গোলাপ গাছ থাকায় এর নাম হয় রোজ গার্ডেন। এই বাড়িটিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৪৯ সালে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠনের প্রাথমিক আলোচনা সভা এই বাড়িতে হয়েছিল।

এ ছাড়া বাগানটি সুদৃশ্য ফোয়ারা, পাথরের মূর্তি ইত্যাদি দ্বারা সজ্জিত ছিল। মূল ভবনের দ্বিতীয় তলায় পাঁচটি কামরা আর একটি বড় নাচঘর আছে। নিচতলায় আছে আটটি কামরা।

ভবনটির মোট আয়তন সাত হাজার বর্গফুট। উচ্চতায় ৪৫ ফুট। ছয়টি সুদৃঢ় থামের ওপর এই প্রাসাদটি স্থাপিত। প্রতিটি থামে লতাপাতার কারুকাজ করা। প্রাসাদটির স্থাপত্যে করিন্থীয়-গ্রিক শৈলী অনুসরণ করা হয়েছে।

ভবন নির্মাণের কিছুদিন পর ঋষিকেশ দাশ দেউলিয়া হয়ে যান। ১৯৩৭ সালে রোজ গার্ডেন বিক্রি হয়ে যায় খান বাহাদুর আবদুর রশীদের কাছে। এর নতুন নামকরণ হয় ‘রশীদ মঞ্জিল’। ১৯৬৬ সালে কাজী হুমায়ুন বসির এর মালিকানা লাভ করেন। ১৯৭০ সালে চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল স্টুডিওকে ইজারা দেওয়া হয়। এ সময়ে চলচ্চিত্রের শুটিং স্পট হিসেবে এই ভবনটি ব্যবহৃত হয়। এখানে চিত্রায়িত কাহিনী চিত্র ‘হারানো দিন’-এ রোজ গার্ডেনের সেই সময়কার চিত্র সংরক্ষিত আছে।

১৯৮৯ সালে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এই প্রাসাদটি সংরক্ষণ তালিকাভুক্ত করে। পরে ১৯৯৩ সালে রোজ গার্ডেনের মালিকানা ফিরে পান কাজী আবদুর রশিদের মেজ ছেলে কাজী আবদুর রকীব। ১৯৯৫ সালে তাঁর মৃত্যুর পর স্ত্রী লায়লা রকীব ওই সম্পত্তির মালিক হন।