শিশু-কিশোরদের নির্যাতন করা হচ্ছে : বিএনপি

Looks like you've blocked notifications!
নয়াপল্টনে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী। এনটিভির পুরোনো ছবি

নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে জড়িত ছাত্রছাত্রীদের হয়রানি ও নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানী নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ অভিযোগ করেন।

বিএনপি নেতা বলেন, ‘চলমান অরাজনৈতিক শিশুকিশোরদের আন্দোলনকে পৈশাচিক কায়দায় দমন করতে তাদের আসামি করা হয়েছে। অবৈধ সরকার দেশের রাজনীতিকে প্রতিহিংসাপরায়ণ ও সংঘাতময় করে তুলেছে। আইনের যথেচ্ছ অপপ্রয়োগের দ্বারা সরকারবিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করতে উন্মাদ হয়ে পড়েছে।’ তিনি শিশু-কিশোরদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও রিমান্ড প্রত্যাহার করে তাদের মুক্তির দাবি করেন।

রিজভী বলেন, ‘নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিশু-কিশোরদের চলমান আন্দোলনে সামাজিক গণমাধ্যমে উসকানি ও সহিংসতার মিথ্যা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন থানায় ৫১টি মামলায় প্রায় শখানেক ছাত্রছাত্রীকে আটক করা হয়েছে। অনেক ছাত্রছাত্রীকে ওই মামলাগুলোতে আসামি করা হয়েছে। এই কোমলমতি শিশু-কিশোরদের আন্দোলন বিশ্বের ইতিহাসে নজিরবিহীন। তারা মানুষের বিবেককে নাড়া দিয়েছে। সমাজের অগ্রগণ্য মানুষরাও বিস্মিত হয়েছে। তাঁরা যা পারেননি শিশু-কিশোররা চোখে আঙুল দিয়ে সেটা করে দেখিয়েছে।’

বিএনপিরর এ নেতা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, শিশু-কিশোররা পথ দেখিয়েছে। কিন্তু এখন আন্দোলনরত শিশু-কিশোররা যে পথ দেখছে তাতে তারা প্রতিদিনই শিহরিত হয়ে উঠছে। তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, রিমান্ডের হাড়-হিম করা অকথ্য নির্যাতন করা হচ্ছে, এরপর পাঠানো হচ্ছে জেলখানায়। মুখে যাই বলুক, সরকার শিশু-কিশোরদের সঙ্গে নিষ্ঠুর প্রতিশোধের খেলায় মেতে উঠেছে। অভিভাবকরা বাচ্চাদের জীবন নিয়ে শঙ্কিত, ভীত, শিহরিত।’

বিএনপি জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘এখন শুধু ছাত্ররাই নয়, ছাত্রীরাও রেহাই পাচ্ছে না আটক ও জুলুমের করালগ্রাস থেকে। গোয়েন্দা পুলিশ একটার পর একটা ছাত্রী আটকের লোমহর্ষক ঘটনার জন্ম দিচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলের সামনে থেকে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের তাসনিম ইমিকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। তাকে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে কয়েক ঘণ্টা নির্মম প্রহর গুনতে হয়। ইমির আটকের ১২ ঘণ্টা পর ইডেন কলেজের কোটা আন্দোলনের আরেক নেত্রী লুৎফুন্নাহার রুমাকে সিরাজগঞ্জে বেলকুচি থানার একটি গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পরে তাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। এই জালিম সরকারের হাত থেকে বাঁচতে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্রী ও সমর্থনকারী নারীরাও রেহাই পাচ্ছে না। এই সব ঘটনায় জাতির সম্ভ্রম ধুলায় লুটিয়ে গেলেও সরকারের চণ্ডমূর্তির কোনো পরিবর্তন হয়নি।’

বিএনপি নেতা বলেছেন, ‘সরকারের অন্যায় আর জুলুমের শিকার হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। দেশনেত্রী বেগম জিয়াকে সব অধিকার থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে। এমননি অসুস্থ দেশনেত্রীকে সুচিকিৎসা না দিয়ে তাঁর জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া সরকারের চক্ষুশূল। তাই প্রতিহিংসার জ্বালা মিটাতেই অন্যায়ভাবে বানোয়াট অসত্য মামলা দিয়ে অন্যায়ভাবে সাজা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ এখন জুলুমের গ্যাস চেম্বারে পরিণত করা হয়েছে। দেশের সর্বত্র রক্ত ঝরছে।’