মুঠোফোনে কলরেট ১০ পয়সা করার দাবি

Looks like you've blocked notifications!
কলরেট বাড়ানোর প্রতিবাদে রাজধানীর ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে আজ শনিবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি : এনটিভি

দেশে মুঠোফোনে কলরেট সর্বনিম্ন ৪৫ পয়সা করার প্রতিবাদ জানিয়ে কলরেট ১০ পয়সা করার দাবি জানিয়েছে সিটিজেন রাইটস মুভমেন্ট। মোবাইল অপারেটরদের মুনাফা বাড়াতেই কলরেট বাড়ানো হয়েছে বলে তাদের অভিযোগ।

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে কলরেট বাড়ানোর প্রতিবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিটিজেন রাইটস মুভমেন্টের পক্ষ থেকে এসব কথা বলা হয়।

সম্মেলনে বলা হয়, মোবাইল অপারেটরদের মুনাফা বাড়াতে খোদ বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন-বিটিআরসিই সহায়তা করেছে। মোবাইল কলরেট যেখানে কমানোর কথা সেখানে উল্টো বিটিআরসিই বাড়িয়ে দিয়েছে।

পাশের যেকোনো দেশের চেয়ে বাংলাদেশে কলরেট বেশি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়। বলা হয়, জনগণের টাকা কেড়ে নিয়ে কেন মোবাইল অপারেটরদের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে সেটি বোধগম্য নয়।’

এ সময় কলরেট ১০ পয়সা করা, ইন্টারনেটের খরচ কমানো, এক সেকেন্ড পালর্স সুবিধা চালু রাখার দাবি জানান সম্মেলনের বক্তারা। এ সময় মুভমেন্টের নেতাকর্মীরা ছাড়াও অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

কলরেট বাড়ানোর প্রতিবাদ জানিয়ে আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। ছবি : এফএনএস

মুঠোফোন গ্রাহকদের মানববন্ধন

কলরেট বাড়ানোর প্রতিবাদ জানিয়ে আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। তারা কলরেট বৃদ্ধিকে অনৈতিক ও অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছে।

মানববন্ধনে মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদ জানান, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন গ্রাহকদের স্বার্থ বিবেচনায় না নিয়ে শুধু অপারেটরদের স্বার্থ বিবেচনা করে কলরেট ২৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪৫ পয়সা নির্ধারণ করেছে। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ফলে গ্রাহকদের ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। এর জন্য কমিশন প্রয়োজনে গণশুনানি করতে পারত। তা না করে তাদের নেওয়া সিদ্ধান্ত গ্রাহককে মানতে বাধ্য করা একটি অগণতান্ত্রিক ও অনৈতিক সিদ্ধান্ত।

কলরেট বাড়ানোর প্রতিবাদ জানিয়ে আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন। ছবি : বিজ্ঞপ্তি

যুব ইউনিয়নের বিক্ষোভ সমাবেশ

মোবাইলে নতুন কলরেট বাতিলের দাবিতে বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন শনিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। এতে যুব ইউনিয়নের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হাফিজ আদনান রিয়াদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার হায়াত, সদস্য খান আসাদুজ্জামান মাসুম, ত্রিদিব সাহা, ঢাকা মহানগরের সভাপতি হাবীব ইমন, সাধারণ সম্পাদক রাসেল ইসলাম সুজন প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, আজ দেশের সব ধরনের সেবাখাতে চলছে চরম নৈরাজ্য। সর্বত্র চলেছে লুটপাটের মহোৎসব।

বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল পল্টন মোড়ে এসে শেষ হয়।  

গত ১৩ আগস্ট মোবাইল ফোনের নতুন কলরেট ঘোষণা করে সরকার। সেদিন রাত ১২টার পর থেকে মোবাইল ফোন অপারেটরদের নতুন কলরেট চালু করার নির্দেশনা দেয় বিটিআরসি।

এই নির্দেশনার ফলে এখন থেকে ভিন্ন অপারেটরে ফোন দিলে বাড়তি রেট নিতে পারবে না অপারেটরগুলো। কিন্তু প্রতি মিনিট কলরেট সর্বনিম্ন ৪৫ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ২ টাকা ঠিক করা হয়। এতদিন অন-নেট বা একই অপারেটরে ফোন কলের জন্য গ্রাহকদের প্রতি মিনিটে সর্বনিম্ন ২৫ পয়সা এবং অফ-নেট বা অন্য অপারেটরে ৬০ পয়সা হারে শুল্ক প্রযোজ্য হতো। এই নিয়ম চলছিল গত সাত বছর ধরে।

এখন নতুন কলরেট সীমার মধ্যে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো নতুন প্যাকেজ গ্রাহকদের অফার করতে পারবে। এ ছাড়া নম্বর না বদলিয়ে অপারেটর পরিবর্তন সেবাও সোমবার মধ্যরাত থেকেই কার্যকর করার নির্দেশনা পাঠায় বিটিআরসি।

বিটিআরসির সর্বশেষ গত জুন মাসের তথ্য অনুযায়ী, ১৫ কোটিরও বেশি সিম আছে দেশের মানুষের হাতে। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের গ্রাহক ছয় কোটি ৯১ লাখেরও বেশি। এরপরই আছে রবির গ্রাহক। রবির গ্রাহক চার কোটি ৪২ লাখ, বাংলালিংকের তিন কোটি ৩২ লাখ এবং টেলিটকের গ্রাহক সংখ্যা ৩৭ লাখের মতো।