‘ঈদের পরই বিয়ে, কিন্তু ট্রেনে উঠতে পারিনি’

Looks like you've blocked notifications!
ট্রেনের ভেতরে তিল ধারণের জায়গা নেই। ট্রেনের ছাদেও একই অবস্থা। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে এই চিত্র। ছবি : এনটিভি

রাজন বন্ধুদের নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। যাবেন জয়পুরহাট। হাতে টিকেট। তবুও ট্রেনে উঠতে পারেননি তিনি। ট্রেনটি ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। এমনকি ছাদেও ছিল ভিড়।

স্টেশনে দাঁড়িয়ে ট্রেনটির কেবল স্টেশন ছেড়ে যাওয়া দেখলেন রাজন। জানালেন অনেক কষ্ট করে ট্রেনের টিকেট সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। ঢাকায় তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন রাজন। তিনি বলেন, ‘টিকেট আছে, কিন্তু উঠতে পারিনি। ঈদের পরই আমার বিয়ে।’

আজ কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনসহ বিভিন্ন বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায় ঘরমুখো মানুষের ভিড়। বাসে-ট্রেনে ঈদযাত্রার ভোগান্তিতে রয়েছেন ঘরমুখো মানুষরা। উত্তরবঙ্গগামী কয়েকটি ট্রেন সোয়া দুই ঘণ্টা থেকে চার ঘণ্টার মতো বিলম্বে ছাড়ছে, আর মহাসড়কে বাস আটকে থাকায় টার্মিনালের যাত্রীরা ঠিকমতো জানতেও পারছেন না কখন তাঁর বাস ছাড়বে।

প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে যেতেই হবে। যতই গাদাগাদি হোক, কোনোরকমে ট্রেনটি ধরে দাঁড়াতে পারাটাই কারো কারো কাছে অনেক পাওয়া।

এক যাত্রী ট্রেনের দরজায় ঝুলে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘জায়গা নেই। তাও তো যাওয়া লাগবে।’ ব্যাগ নিয়েই দরজায় ঝুলে ছিলেন এক যাত্রী। তিনি বলেন, ‘১২ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও টিকেট পাইনি।’

একজন বললেন, ‘ভেতরে উঠেছি ভাই। জীবন যায়যায় অবস্থা।’ আরেকজন বললেন, ‘দরজা দিয়ে উঠতে পারিনি। আমাদের জানালা দিয়ে উঠতে হয়েছে।’  

বারবার নিষেধ সত্ত্বেও এ সময় ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ যেন স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভেতরে তিল ধারণের জায়গা নেই, ট্রেনের দরজায়ও একটু ঠাঁই পাওয়ার জো নেই।

আজ সোমবার সুন্দরবন, ধূমকেতু, রংপুর, নীলসাগর ও লালমনি এক্সপ্রেস দুই থেকে চার ঘণ্টা দেরিতে ছাড়লেও একে শিডিউল বিপর্যয় বলে মানতে রাজি নয় রেল কর্তৃপক্ষ।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘যাত্রীরা নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছাক, এটা আমরা চাই। নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছছে এটাই যথেষ্ট।’

বাসের যাত্রীদেরও একই ভোগান্তি। মহাসড়কে বাসগুলো আটকে থাকায় টার্মিনালে যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

সরকারি ঈদের ছুটির আগে সোমবার ছিল শেষ কার্যদিবস।