দোকান হারালেন নারী, অভিযোগ আ. লীগ নেতার বিরুদ্ধে
প্রভাব খাটিয়ে জেলা পরিষদের দোকান ঘরের ইজারা বাতিল করে নতুন ভাবে বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জয়পুরহাট জেলা পরিষদ প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম সোলায়মান আলীর বিরুদ্ধে। আনোয়ারা বেওয়া নামের এক ব্যক্তি আজ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অভিযোগ করেছেন, নিজের স্বজনকে দোকান পাইয়ে দেওয়ার জন্য সোলায়মান আলী তাঁর (আনোয়ারা) দোকানের ইজারা বাতিল করেছেন।
সোমবার জয়পুরহাট প্রেসক্লাব ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আনোয়ারা বেওয়া নিজের অভিযোগ তুলে ধরেন।
লিখিত বক্তব্যে আনোয়ারা বলেন, তাঁর (আনোয়ারা)স্বামী গিয়াস আহম্মেদ চাষযোগ্য জমি বিক্রি করে সে টাকায় জয়পুরহাট শহরের প্রধান সড়কের শহীদ ডা. আবুল কাশেম ময়দানের গেটের পাশ ঘেঁসে জেলা পরিষদের গড়ে তোলা বিপণিবিতান ১-এর চার নম্বর দোকান ঘরটি তৎকালীন বগুড়া জেলা পরিষদ অফিস থেকে ইজারা নেন। সে সময় তিনি রশিদ মূলে ইজারার ২২ হাজার ৩১ টাকা ৯৯ পয়সা জমা দেন বগুড়া জেলা পরিষদ কার্যালয়ে। তখন থেকে তার স্বামী ওই দোকান ঘরটিতে ঘড়ির ব্যবসা করছিলেন। কিন্তু স্বামীর অসুস্থতার কারণে ঘড়ির ব্যবসা বন্ধ করে ঘরটি ২০০৬ সালের দিকে ঢাকাগামী দিবা ও নৈশকালীন কোচ হানিফ পরিবহনের(হানিফ এন্টারপ্রাইজ) কাছে ভাড়া দেন। এ অবস্থায় ২০০৯ সালের ১৭ মার্চ তাঁর স্বামী মারা গেলে সেই থেকে হানিফ পরিবহনের কাছে দেওয়া ঘরটির ভাড়ার টাকায় কোনো রকমে তাঁর (আনোয়ারা) সংসার চলছিল।
সংবাদ সম্মেলনে আনোয়ারা বেওয়া বলেন, ‘বিগত ৩৫ বছর ধরে ঘরটি ভোগ দখল করার পর সাবলিজ প্রদান করার অভিযোগ এনে জেলা পরিষদ থেকে গত বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি দোকান ঘর বরাদ্দ বাতিলের জন্য আমাকে চিঠি দেওয়া হয়। অথচ জেলা পরিষদ মার্কেটের দোকান বরাদ্দ নিয়ে অধিকাংশ মালিকরা সাবলিজ দিয়ে ভাড়া আদায় করলেও প্রশাসক মহোদয় সেখানে নীরব রয়েছেন। এ অবস্থায় গত মার্চ মাসে স্বামীর নামে নেওয়া ওই ঘরের বরাদ্দ বাতিল করে ঘরটি শহরের আরাফাত নগরের মেসার্স মদিনা এন্টারপ্রাইজ প্রো. এনায়েতুল্লাহ আকন্দের নামে নতুন করে বরাদ্দ দেওয়া হয়।’
আনোয়ারা বেওয়া অভিযোগ করেন যে, মদিনা এন্টারপ্রাইজের মালিক এনায়েতল্লাহ আকন্দ জয়পুরহাট জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম সোলায়মান আলীর শ্যালক।তিনি শ্যালককে ঘরটি পাইয়ে দেওয়ার জন্যই কৌশলে তাঁর ইজারা বাতিল করে জোর করে ওই দোকানঘর থেকে বের করে দিয়েছেন। প্রতিবন্ধী এক সন্তানকে নিয়ে এখন মানবেতর জীবন যাপন করছেন বলে জানিয়েছেন আনোয়ারা।
এ ব্যাপারে মুঠোফোনে জানতে চাইলে জয়পুরহাট জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম সোলায়মান আলী তাঁর বিরুদ্ধে ওই দোকানঘর বরাদ্দের বিষয়ে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ অস্বীকার করেন।