গ্রেনেড হামলা প্রসঙ্গে কাদের

বিএনপির অনেক নেতার জড়িত হওয়ার আশঙ্কা আছে

Looks like you've blocked notifications!
আজ শনিবার সকালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর তলদেশে চারলেন বিশিষ্ট সড়ক ট্যানেল নির্মাণকাজ পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ছবি : এনটিভি

২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনার দায় বিএনপি এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি আরো বলেন, ‘সেই জন্যই আমি বলেছি, বিএনপির অনেক নেতার জড়িত হওয়ার আশঙ্কা আছে।’

আজ শনিবার সকালে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বহু লেনবিশিষ্ট সড়ক ট্যানেল নির্মাণকাজ পরিদর্শনে এসে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি জানান, ট্যানেলের প্রায় ২৪ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।  

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী জনসভায় গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হয়ে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে তিনদিন পর ২৪ আগস্ট আইভি রহমান মারা যান। এ হামলায় ২৪ জন নিহত হয়েছিলেন। আহত হয় অন্তত ৫০০ জন।

সম্প্রতি আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় হত্যা মামলার বিচারিক আদালতের রায় দেওয়া সম্ভব হবে। রায়টি হলে দেশ আরো একটি দায় থেকে মুক্তি পাবে।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামি ৫২ জন। এর মধ্যে ১৮ জন পলাতক। এ মামলায় আদালতে ২২৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। ৫২ আসামির মধ্যে তিনজনের অন্য মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় তাঁদের মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এই তিন আসামি হলেন জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান ও শরীফ সাহেদুল আলম বিপুল।

এখন ৪৯ আসামির বিচার চলছে। এর মধ্যে এখনো বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরীসহ ১৮ জন পলাতক। বাবর, আবদুস সালাম পিন্টু, সাবেক তিন আইজিপি ও পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিন নেতা আবদুল মাজেদ বাটসহ ২৩ আসামি কারাগারে এবং আটজন জামিনে রয়েছেন।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সম্পূরক অভিযোগপত্রে তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ষড়ন্ত্রকারী হিসেবে আরো অনেকের নাম আসে। মামলায় মোট আসামি হয় ৪৯ জন।

‘শেখ হাসিনাই ছিল তাঁদের প্রধান টার্গেট ছিল’ মন্তব্য করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা এই কিলিংয়ের টার্গেট ছিল। সারা দেশ জানে বিএনপির সরকার তখন ক্ষমতায়। হাওয়া ভবনের পরিকল্পনায়, ডিজাইনে এটা হয়েছে। এগুলো এখন আর কোনো গোপন বিষয় নয়। আইভি রহমানসহ ২৪ জনের প্রাণের প্রদীপ নিভে গেছে। শেখ হাসিনার ওপর আল্লাহর অশেষ রহমত ছিল বলে বেঁচে গেছেন।’

‘এই বর্বর হত্যাকাণ্ডের রায় হতে যাচ্ছে। রায় কী হবে, কারা এতে জড়িত- সেটা বিচারালয় সিদ্ধান্ত নেবেন। আদালত রায় দেবেন, এখানে আমাদের কোনো হাত নেই। আদালত স্বাধীন।’

‘এই ঘটনাটির নীলনকশাকারী বিএনপি। সেই অবস্থায় আমরা বলতেই পারি, বিএনপির এর দায় এড়াতে পারে না। আমরা আশা করব, রায় বাস্তবতার নিরিখেই হবে। যা ঘটেছে সেই নিরিখেই বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে এই রায় দেবে। এবং সেজন্যই আমি বলেছি, বিএনপির অনেক নেতার জড়িত হওয়ার আশঙ্কা আছে’, যোগ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

এ সময় সেখানে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান নওফেল, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, বিভাগীয় কমিশনার আবদুল মান্নান, জেলা প্রশাসক ইলিয়াছ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে আট হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে চারলেন বিশিষ্ট তিন দশমিক চার কিলোমিটার দীর্ঘ এই ট্যানেল নির্মাণকাজ চলছে। এরই মধ্যে ট্যানেলের ২৪ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানান সেতু মন্ত্রী।