১০ জনের জীবন বাঁচানো কিশোরকে শিক্ষা সহায়তা

Looks like you've blocked notifications!
কিশোর সুমন হোসেনের সাহসিকতায় মুগ্ধ হয়ে তাঁকে পাঁচ হাজার টাকা শিক্ষা সহায়তা দিয়েছেন পাবনার জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন। ছবি : এনটিভি

মো. সুমন হোসেন। বয়স ১৩/১৪ বছর। পাবনার চাটমোহর উপজেলার প্রত্যন্ত হাণ্ডিয়াল দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। প্রচণ্ড সাহসী। পরোপকারে এলাকায় তার যথেষ্ট সুনাম। মানুষের বিপদে সবসময় পাশে থাকে। এ নিয়ে মা মাঝেমধ্যে বাবার বকুনিও খেতে হয় তাকে। তবে এলাকার মানুষ এখন তাকে নিয়ে বেশ গর্বিত। 

গত শুক্রবার সন্ধ্যায় চলনবিলে পাবনার চাটমোহর উপজেলার পাইকপাড়ায় তার চোখের সামনেই ঘটে মর্মান্তিক নৌকাডুবির ঘটনা। এতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়। তবে সুমনের সাহসিকতায় প্রাণে বেঁচে যায় শিশু, নারী, পুরুষসহ অন্তত ১৭ জন। সে একাই ১০ জনকে তার ডিঙ্গি নৌকায় তুলে পৌঁছে দেয় তীরে। পাবনার জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন সুমনের সাহসিকতায় মুগ্ধ হয়ে তাঁকে পাঁচ হাজার টাকা শিক্ষা সহায়তা দিয়েছেন।

কিশোর সুমন হোসেন বলে, শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে পাবনার চাটমোহর উপজেলার পাইকপাড়ায় এলাকায় বিলের মধ্যে সে নৌকা চালাচ্ছিল। এ সময় সে দেখতে পায় একটি বড় ছইওয়ালা নৌকার ওপর কয়েকজন নারী-পুরুষ মোবাইল ফোনে ছবি তুলছে। হঠাৎ তার চোখের সামনের নৌকাটি ডুবে যায়। এ সময় দ্রুত নৌকা নিয়ে একে একে ১০ জনকে উদ্ধার করে তীরে পৌঁছে দেয় সে। অপর সাতজন তার নৌকা ধরে তীরের কাছাকাছি আসে। তবে পাঁচজনকে উদ্ধার করতে না পারায় সুমনের মনে কষ্ট রয়েছে।

চলনবিলের সাংবাদিক, কবি ও সমাজসেবক জাকির সেলিম বলেন, ‘সুমনের জন্য আমাদের এলাকার সবাই গর্বিত। তার মতো কিশোরের সাহসিকতায় ১০ জন মানুষ নতুন জীবন পেয়েছে। সে দরিদ্র পরিবারের সন্তান। চার ভাই। বাবার নাম আবদুস সামাদ। পাইকপাড়ায়ই তাদের বাড়ি। নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। পড়াশুনা চালিয়ে যেতে পারলে ও ভালো করবে।’

পাবনার জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘সুমন আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে কীভাবে মানুষের উপকার করতে হয়। সুমনের সাহসিকতায় মুগ্ধ হয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে পাঁচ হাজার টাকা শিক্ষা সহায়তা দেওয়া হয়েছে।’

নৌকাডুবির ঘটনায় নিহত ব্যক্তিরা হলেন ঈশ্বরদীর কলাম লেখক মোশারফ হোসেন মুসার স্ত্রী শাহনাজ পারভীন পারুল, ব্যবসায়ী স্বপন বিশ্বাস, তাঁর মেয়ে সাদিয়া খাতুন, ঈশ্বরদী আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বিল্লাল গণি ও তাঁর স্ত্রী মমতাজ পারভীন শিউলী।