বিপুল আয়োজন করে মেয়রের দায়িত্ব নিলেন জাহাঙ্গীর

Looks like you've blocked notifications!
স্মরণকালের বৃহৎ অভিষেক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করলেন অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর আলম। ছবি : এনটিভি

২৩৬ কোটি টাকা ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে স্মরণকালের বৃহৎ অভিষেক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করলেন অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর আলম। মঙ্গলবার বিকেলে জেলা শহরের ভাওয়াল রাজবাড়ী মাঠে এ উপলক্ষে আয়োজিত আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সাংসদ রহমত আলী, সাংসদ জাহিদ আহসান রাসেল ও সিমিন হোসেন রিমি, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খান, গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র জামাল মোস্তফা, গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার ওয়াই এম বেলালুর রহমান, গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান ও গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কে এম রাহাতুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে এলজিআরডি মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের উপস্থিতিতে নবনির্বাচিত মেয়র জাহাঙ্গীর আলম প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে স্বাক্ষর করে মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র রাষ্ট্র নায়ক যিনি দিনক্ষণ নির্ধারণ করে বাংলাদেশের উন্নয়নের রোডম্যাপ নির্ধারণ করেছেন। ২০২১ সালের মধ্যে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হব। এ বাংলাদেশে কোনো গরিব মানুষ থাকবে না। কেউ চাল বিহীন ঘরে থাকবে না।

এলজিআরডি মন্ত্রী আরো বলেন, উন্নয়নের পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলররা আজ দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। এ সিটি করপোরেশনকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা ও সহযোগিতা করব। আপনাদের উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেখে আমাদের স্বপ্ন শক্তিতে পরিণত হয়েছে। গাজীপুরের উন্নয়নের জন্য এ সরকার সামর্থ্য অনুযায়ী সব ধরনের চেষ্টা চালাবে।

গাজীপুর মহানগরের উন্নয়নে শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে মন্ত্রী বলেন, শিল্প স্থাপনকে সহযোগিতা করবে, আর তারা যে ট্যাক্স দিবে তা দিয়ে সিটির উন্নয়ন করা যাবে।

মেয়র জাহাঙ্গীর আলম তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমি নগরবাসীকে বলেছিলাম একটি সুন্দর পরিকল্পিত নগরী উপহার দেব। নগরবাসী আমাকে বিশ্বাস করেছে, সেই বিশ্বাসের মর্যাদা আমি রাখব ইনশা আল্লাহ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নৌকাকে ভালোবেসে গাজীপুরের জনগণ আমাকে যে আশায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছে, আমি তাদের এই আশার প্রতিফলন ও প্রতিদান দেওয়ার চেষ্টা করব। সবাইকে নিয়েই একটি বাসযোগ্য শহর গড়ে তুলব। সব মানুষ যেন নিরাপদে ঘুমাতে পারে এবং কর্মস্থলে যেতে পারে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তিনি গাজীপুরকে গ্রিন ও ক্লিন সিটি হিসেবে গড়তে তুলতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

মেয়র জাহাঙ্গীর আলম হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী নগরীর কোনো নাগরিকের কাছে অনৈতিক কিছু দাবি করলে তা তাঁকে (মেয়রকে) জানাতে বলেন। এ ব্যাপারে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়ে দেন।

মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বক্তব্যকালে গাজীপুর সিটি করপোরেশনকে আধুনিক নগরীতে পরিণত করতে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী ও বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতায় আগামী ১০ বছরের জন্য একটি পরিকল্পনার চিত্র থ্রি-ডি আকারে প্রচার করা হয়। ওই চিত্রে তিনি কী কী উন্নয়ন কার্যক্রম করতে চান, দেশি বিদেশি বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের সহযোগিতায়, তিনি নগরীকে কী ধরনের সেবা প্রদান করবেন, তার বিস্তারিত পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।

অনুষ্ঠানে চীন, ভারত, জাপান ও কোরিয়াসহ ১০টি দেশের ব্যবসায়ীসহ নবনির্বাচিত কাউন্সিলর ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কুতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।