খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে রিটের শুনানি কাল

Looks like you've blocked notifications!
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। পুরোনো ছবি : এনটিভি

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেশের বিশেষায়িত কোনো হাসপাতালে চিকিৎসার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের ওপর ‘নট টুডে’ (শুনানি আজ নয়) আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর ফলে আবেদনটির ওপর আগামীকাল মঙ্গলবার শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবীরা।

খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী। সঙ্গে ছিলেন এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, কায়সার কামাল।

এর আগে শুনানির জন্য খালেদা জিয়ার আবেদনটি হাইকোর্টের কার্যতালিকায় ৬৫ নম্বরে রাখা হয়েছিল। তবে শুনানির প্রস্তুতির জন্য আরো সময় প্রয়োজন উল্লেখ করে আজ হাইকোর্টের কাছে সময় আবেদন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। এরপর আদালত সময় আবেদনটি মঞ্জুর করে নট টুডে আদেশ দেন।

এর আগে গতকাল বিশেষায়িত বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সুবিধা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তাঁর আইনজীবী কায়সার কামাল হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিট দায়ের করেন।

রিটের পর রিটকারী আইনজীবী কায়সার কামাল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, খালেদা জিয়ার পছন্দমতো কোনো হাসপাতালে সুচিকিৎসার নির্দেশনা চেয়ে আজ দুপুরে রিট করা হয়েছে।

কায়সাল কামাল বলেন,‘গত ৫ সেপ্টেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল দাবি করেন, ‘খালেদা জিয়া অসুস্থ। এ জন্য আদালত কারাগারে বসানো হয়েছে। এতে সরকার কর্তৃক স্বীকৃত হয় যে খালেদা জিয়া অসুস্থ। খালেদা জিয়া নিজেও ৫ সেপ্টেম্বর আদালতে বলেছেন, তাঁর হাত-পা প্যারালাইজড হয়ে যাচ্ছে। তিনি গুরুতর অসুস্থ। এ কারণে ওনার পছন্দমতো হাসপাতালে চিকিৎসার নির্দেশনা দিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আমাকে রিট করার দায়িত্ব দিয়েছেন।’

গত ৫ সেপ্টেম্বর পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর হওয়া অস্থায়ী বিশেষ জজ আদালতে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার শুনানি হয়। এ জন্য সেদিন দুপুর ১২টা ১২ মিনিটে খালেদা জিয়াকে একটি হুইলচেয়ারে করে আদালতে নেওয়া হয়।

শুনানিকালে বিচারক ড. আখতারুজ্জামানের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, ‘জজ সাহেবের কাছে কোনো কথা বা নিবেদন করা যায় না। উনি তারিখ দিয়ে উঠে চলে যান। আমাদের কারো কথা শোনেন না। সরকারের হুকুমে এবং নির্দেশে তিনি সবকিছু পরিচালনা করছেন। আমার পায়ে ব্যথা। ডাক্তার আমাকে পা সব সময় উঁচু করে রাখতে বলেছেন। হাতেও প্রচণ্ড ব্যথা। আমাকে জোর করে এখানে আনা হয়েছে। আমি খুবই অসুস্থ। আমি ঘন ঘন কোনো হাজিরা দিতে পারব না। রায় তো লেখাই আছে। আমার হাত-পা প্যারালাইজড হয়ে যাচ্ছে। আপনাদের যা ইচ্ছা রায় দেন, যত খুশি সাজা দিয়ে দেন।’

আদালতে খালেদা জিয়া বলেন, ‘এখানে যে আদালত বসানো হয়েছে এবং প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে, তা আমার আইনজীবীরা জানেন না। এটা জানলে আমি আসতাম না। আদালত পরিবর্তন হলে কমপক্ষে সাত দিন আগে নোটিশ দিতে হয়। তা জানানো হয়নি। তড়িঘড়ি করে বিচারের জন্য এ কারাগারের ভেতরে আদালত বসানোর এ আয়োজন। মাননীয় আদালত, আমি জানি এ আদালতে আমি ন্যায়বিচার পাব না। সরকারের নির্দেশে এ কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। আমি আর এই আদালতে আসব না।’

এরপর আদালত মামলার পরবর্তী কার্যক্রম আগামী ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেন। এ সময় পর্যন্ত এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন বহাল রাখেন আদালত।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি দুদকের দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান। এ মামলায় খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ অন্য আসামিদের ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া অর্থদণ্ডও করা হয়। রায়ের পর খালেদা জিয়া রাজধানীর নাজিমুদ্দিন রোডের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে সাজা ভোগ করছেন।