১১ দাবি নিয়ে মানববন্ধনে যশোরবাসী

Looks like you've blocked notifications!
যশোর বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীতকরণ, বৃহত্তর যশোরের চার জেলায় চারটি অর্থনৈতিক জোন তৈরিসহ ১১ দফা দাবিতে আজ শনিবার মানববন্ধন করে যশোরের সর্বস্তরের মানুষ। ছবি : এনটিভি

যশোর বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীতকরণ, বৃহত্তর যশোরের চার জেলায় চারটি অর্থনৈতিক জোন তৈরিসহ ১১ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে যশোরের সর্বস্তরের মানুষ।

বৃহত্তর যশোর উন্নয়ন ও যশোর বিভাগ বাস্তবায়ন পরিষদের উদ্যোগে আজ শনিবার সকাল ১০টায় স্থানীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন করা হয়।

ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধনে যশোরের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। মানববন্ধন শেষে প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের নেতারা ১১ দফা দাবি তুলে ধরেন।

তাদের দাবিগুলো হলো ১. যশোর বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণ, ২. নড়াইল, মাগুরা, ঝিনাইদহ ও যশোরে চারটি অর্থনৈতিক জোন, ৩. যশোরকে পৃথক বিভাগ ও সিটি করপোরেশন ঘোষণা ও বাস্তবায়ন, ৪. পূর্ণাঙ্গ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, লালন ও মধুসূদনের নামে সাংস্কৃতিক বিশ্ববিদ্যালয়, মহিলা ক্যাডেট কলেজ, নড়াইল ও ঝিনাইদহে মেডিকেল কলেজ স্থাপন, ৫. বেনাপোল স্থলবন্দর আধুনিকায়ন, ৬. দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া ফেরিঘাটে পদ্মা টানেল অথবা পদ্মাসেতু নির্মাণ এবং দৌলতদিয়া-যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ, ৭. চার জেলায় আন্তঃজেলা রেল যোগাযোগ, ঢাকা-খুলনা চলমান রুটে নতুন একটি রেল চালু এবং খুলনা-কলকাতা ট্রেন যশোরে যাত্রাবিরতি, ৮. যশোরের চারটি জেলায় গ্যাস সরবরাহ, ৯. যশোরে আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণ, ১০. বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখা স্থাপন, ১১. পর্যটন করপোরেশনের মাধ্যমে একটি পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণ।

বৃহত্তর যশোর উন্নয়ন ও যশোর বিভাগ বাস্তবায়ন পরিষদের উদ্যোগে আজ শনিবার মানববন্ধন শেষে যশোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে। ছবি : এনটিভি

এ সময় তাঁরা দাবিগুলোর পক্ষে নানা রকম যুক্তি তুলে ধরেন। একই সঙ্গে দাবিগুলো মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তাঁরা।

সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধনে বলা হয়, ১৭৮১ সালে বাংলার অন্যতম প্রাচীন জেলা যশোর দেশ ও জাতির উন্নয়নে যে ভূমিকা রেখে চলেছে সেই হিসেবে এই অঞ্চল উন্নয়নের দিক দিয়ে পিছিয়ে আছে। বেনাপোল বন্দর থেকে প্রতি বছর পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব পায় সরকার। এ ছাড়া কৃষি ও শিল্প খাত থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা আয় হয়। বৃহত্তর যশোর থেকে অর্জিত এই অর্থ এ অঞ্চলের উন্নয়নে খুব সামান্যই ব্যয় করা হয়। শুধু উন্নয়নের দিক দিয়েই যশোর পিছিয়ে নেই, সরকারের মন্ত্রিপরিষদে বা নীতিনির্ধারণী পর্যায়েও এ অঞ্চলের মানুষের গুরুত্ব সব সময় কম থাকে। এ অঞ্চলের উন্নয়নের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখা ব্যক্তির অভাব রয়েছে।

সম্মেলনে আরো বলা হয়, কলকাতা ও হাওড়ার পরেই যশোর পৌরসভার স্থান ছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, বাংলার প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী এই জেলাটি ভারত বিভক্তের পর থেকে নানাভাবে পিছিয়ে পড়ে। ২০১২ সালের ২০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যশোর ঈদগাহ ময়দানের এক জনসভায় বলেছিলেন, ‘যশোর একটি পুরোনো শহর। আমরা যদি আগামীবার ক্ষমতায় আসতে পারি, তাহলে যশোরকে সিটি করপোরেশন করব। সেই প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছি।’ গত ছয় বছরে যশোরবাসীর সেই আশা পূরণ হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে বৃহত্তর যশোর উন্নয়ন ও বিভাগ বাস্তবায়ন পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব) হাসান ইকবাল, যশোর কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট এনামুল হক, সহ-সভাপতি হারুন অর রশিদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ পড়েন বৃহত্তর যশোর উন্নয়ন ও বিভাগ বাস্তবায়ন পরিষদ যশোর কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট এনামুল হক। সভাপতিত্ব করেন পরিষদের ঢাকা কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শৈলেন্দ্রনাথ সাহা।