এক দুর্গামণ্ডপে আড়াইশ প্রতিমা
হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ফরিদপুর জেলায় চলছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। এরই মধ্যে জেলার প্রতিটি মন্দির সাজতে শুরু করেছে বর্ণিল আয়োজনে। জেলার ধোপাডাঙ্গা এলাকার যশোদা জীবন দেবনাথের বাড়িতে বৃহৎ পরিসরে প্রায় আড়াইশ প্রতিমা নিয়ে এবারের দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
পৌরাণিক কাহিনী মহাভারত ও রামায়ণের গল্পকথা যেন মূর্ত হয়ে উঠবে ফরিদপুরের ধোপাডাঙ্গার যশোদা জীবন দেবনাথের বাড়ির দুর্গোৎসবে। এখানে দেবী দুর্গা ছাড়াও স্থান পাবে প্রায় আড়াইশ প্রতিমা।
মৃৎশিল্পীরা দুই মাস ধরে দিন-রাত শ্রম দিচ্ছেন। শিল্পীরা যেন রামায়ণ ও মহাভারতের কাহিনীকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার কাজে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। ব্যতিক্রমী এই পূজার আয়োজন একঝলক দেখতে পূজা শুরু হওয়ার আগেই এখন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দর্শনার্থীরা আসছেন।
প্রতিমাশিল্পী সুকুমার পাল জানান, দুই মাস ধরে রামায়ণ ও মহাভারতের মূল কাহিনী ফুটিয়ে তোলার কাজ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আশা করছি, আমরা মহাষষ্ঠীর আগের দিন সব প্রতিমা তৈরি ও পুরো মণ্ডপের সাজসজ্জার কাজ সম্পন্ন করতে পারব।’
প্রতিমা কারিগররা জানান, এটি দেশের কয়েকটি সেরা পূজামণ্ডপের মধ্যে একটি।
এই পূজামণ্ডপের প্রধান আয়োজক যশোদা জীবন দেবনাথ সিআইপি জানান, দেবী দুর্গা, কার্তিক, গণেশসহ প্রায় আড়াইশ প্রতিমা স্থাপনের মাধ্যমে দেশের অন্যতম বড় পরিসরে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি, এই পূজা দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা আসবেন। এই আয়োজনে মহাভারত ও রামায়ণের গল্পকথার কোনো কিছুই অপূর্ণ রাখা হবে না।’
এ ছাড়া পূজা উপলক্ষে জেলার সাড়ে সাত শতাধিক মন্দিরে এখন প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে। জেলার অধিকাংশ মন্দিরে এখন চলছে রংতুলির প্রথম ভাগের কাজ। জেলার পাল সম্প্রদায়ের কারিগররা এখন দিন-রাত ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা ফুটিয়ে তোলার কাজে।
আগামী ৯ অক্টোবর মহালয়ার মধ্য দিয়ে শারদীয়া দুর্গোৎসবের শুভসূচনা হবে। এরপর ১৪ অক্টোবর হবে দুর্গার বোধন (বেলা ষষ্ঠী), ১৫ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। শেষ হবে ১৯ অক্টোবর বিজয়া দশমী; দেবীর বিসর্জনের মাধ্যমে।
ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা শরৎ সাহার বাড়ি, পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের দুটি পূজামণ্ডপ, কাঁসার পট্টি, সোনার পট্টি, শিবরামপুরের তপন ডাক্তারের বাড়ির পূজামণ্ডপ সাজছে নানা আয়োজন নিয়ে।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুকেশ চন্দ্র সাহা বলেন, এবার জেলার নয়টি উপজেলায় সাড়ে সাত শতাধিক মন্দিরে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, ফরিদপুর দুর্গাপূজা উদযাপনের দিক দিয়ে সারা দেশের মধ্যে অন্যতম।
জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. জাকির হোসেন খান বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা শেষ করতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। মন্দিরগুলোতে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য পুলিশ, আনসারসহ ভ্রাম্যমাণ দল কাজ করবে। পূজামণ্ডপগুলোতে নিরাপত্তা দিতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।