বাগেরহাট-১ আসনে বিএনপির ৫ নেতা মাঠে
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বাগেরহাট-১ (ফকিরহাট-মোল্লাহাট-চিতলমারী) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেতে মাঠে কাজ করছেন পাঁচ মনোনয়নপ্রত্যাশী। বিভিন্ন স্থানে পোস্টারিং থেকে শুরু করে নিয়মিত দলীয় কর্মীদের খোঁজখবর নেওয়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার এবং গণসংযোগ করে তাঁরা জানান দিচ্ছেন নিজেদের উপস্থিতি।
বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী পাঁচ নেতা হলেন—বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শেখ ওয়াহিদুজ্জামান, ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ রবিউল আলম, বাগেরহাট জেলা বিএনপির সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শেখ মাসুদ রানা ও খুলনা বিভাগীয় জাসাসের সাবেক নেতা মনজুর মোর্শেদ স্বপন।
বাগেরহাট-১ আসনটি মূলত আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে বিবেচিত। বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ হেলাল উদ্দিন কোনো কারণে না দাঁড়ালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ আসনে প্রার্থী হতে পারেন বলে অনেকের ধারণা।
বিএনপি নেতা শেখ মুজিবুর রহমান তিনবার এ আসনে নির্বাচন করেছেন। প্রতিবারই তিনি পরাজিত হন। ২০০৮ সালে মনোনয়ন পান শেখ ওয়াহিদুজ্জামান দিপু। তিনিও পরাজিত হন। ফলে এবার নতুন কেউ মনোনয়ন পেতেও পারেন।
মোল্লাহাট, চিতলমারী ও ফকিরহাট উপজেলা নিয়ে গঠিত বাগেরহাট-১ আসনে মোট দুই লাখ ৩৪ হাজার ১৫০ ভোটের মধ্যে প্রায় ৭০ হাজার হিন্দু ধর্মাবলম্বীর ভোট আছে। প্রচলিত আছে, এই ভোটের একটি বড় অংশই নৌকা মার্কায় যায়। এই ভোটই আওয়ামী লীগকে এ আসনে বারবার জয়লাভে সাহায্য করে। এ আসনে মূলত প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে। ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনী ফলাফলে দেখা যায় আওয়ামী লীগের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল বিএনপি।
এ আসনে ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের পক্ষে নির্বাচিত হন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. মোজাম্মেল হোসেন। তিনি পান ৬২ হাজার ৪৫ ভোট। সে সময় তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির শেখ মুজিবুর রহমান পান ৪০ হাজার ১৫৫ ভোট। এরপর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থিতা নিয়ে দলীয় কোন্দল মেটাতে এ আসনে দাঁড়ান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সেবার তিনি ৭৭ হাজার ৩৪২ ভোট পেয়ে নির্বচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদন্দ্বী বিএনপির শেখ মুজিবুর রহমান পান ৪৭ হাজার ৯৯৯ ভোট। ২০০১ সালে এ আসনে আওয়ামী লীগের পক্ষে দাঁড়ান শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলাল উদ্দিন। তিনি এক লাখ ছয় হাজার ২৩২ ভোট পেয়ে সেবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী চারদলীয় ঐক্যজোটের প্রার্থী শেখ মুজিবুর রহমান পান ৮২ হাজার ৯২২ ভোট।
বাগেরহাট-১ আসনের তিনটি উপজেলার মধ্যে ফকিরহাট ও মোল্লারহাটে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রায় সমান সমান ভোট পেলেও চিতলমারী উপজেলার ভোট আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে এগিয়ে রাখে।
আওয়ামী লীগ বরাবরই এ আসনে এগিয়ে থাকলেও দেশের বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি নিজের পক্ষে ভোট টানতে পারে বলে মনে করছেন মনোনয়নপ্রার্থীরা।