অভিযান শেষে র‍্যাব

জঙ্গিদের টার্গেট ছিল আদালত

Looks like you've blocked notifications!
চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে এই বাড়িটি ঘিরে অভিযান শুরু করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন। ছবি : এনটিভি

চট্টগ্রামের আদালতে হামলার টার্গেট নিয়েই জঙ্গিরা মিরসরাই উপজেলায় মহাসড়কের পাশের জোরারগঞ্জের সোনাপাহাড় এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে উঠেছিল বলে অভিযান শেষে জানিয়েছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। ‘আস্তানা’ থেকে যে রাইফেল উদ্ধার করা হয়েছে, একই ধরনের অস্ত্র ঢাকার হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলার ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয়েছিল।

গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টা থেকে উত্তর সোনাপাহাড় এলাকার একতলা টিনের বাড়িটি ঘিরে রাখে র‍্যাব। আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা থেকে বম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা সেখানে পৌঁছান। দুই ঘণ্টা পর তাঁরা অভিযান শেষ করার ঘোষণা দেন।

অভিযান শেষে র‍্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ ঘটনাস্থলে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বাড়ির ভেতর থেকে দুই জঙ্গির ছিন্নভিন্ন লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁরা নিজেদের বোমা বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক, একটি একে ২২ রাইফেল, তিনটা পিস্তল, পাঁচটি গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছে।’

অভিযান সম্পর্কে মুফতি মাহমুদ বলেন, ‘এ অঞ্চলে একটি জঙ্গিদল অস্ত্র নিয়ে সংগঠিত হচ্ছে, গোপন সংবাদে সেটা জানা যায়। তারা যে যার মাধ্যমে যোগযোগ রক্ষা করত, সেটি র‍্যাব চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়। তার ভিত্তিতেই এ অভিযান চালানো হয়। রাত সাড়ে ৩টায় যখন অভিযান শুরু হয়, এর মধ্যে গোলাগুলি ও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। রাত সাড়ে ৪টার দিকে বাড়ির মালিক ও তত্ত্বাবধায়ককে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করি।’

‘তাঁরা জানিয়েছেন, ২৮ সেপ্টেম্বরের দিকে সোহেল নামের এক ব্যক্তি এই বাড়ি ভাড়া নেয়। সে বলে, তার স্ত্রী, শাশুড়ি ও আরো একজন থাকবেন। সে আরো বলে, বিএসআরএমে চাকরি করে।’

মুফতি আরো বলেন, ‘এখন থেকে যে একে ২২ রাইফেল উদ্ধার করা হয়েছে, এটি হলি আর্টিজানের হামলার সময় ব্যবহৃত হয়। আমাদের কাছে তথ্য ছিল, খুব তাড়াতাড়ি তারা চট্টগ্রামে নাশকতার পরিকল্পনা করছিল। কিছু ডকুমেন্টসও আমরা পেয়েছি যে, চট্টগ্রামের আদালতে তাদের একটা নাশকতা করার পরিকল্পনা ছিল।’

র‍্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে উত্তর সোনাপাহাড় এলাকার একতলা টিনের বাড়িটি ঘিরে অভিযান শুরু হয়। বাড়িটির নাম ‘চৌধুরী ম্যানশন’। র‍্যাব প্রথমে মাইকে বাড়ির বাসিন্দাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানায়। আধা ঘণ্টা পর বাড়িটির ভেতর থেকে র‍্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। তখন র‍্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। উভয় পক্ষের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ গোলাগুলি হয়। এর কিছুক্ষণ পর বেশ কয়েকটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে। বোমা বিস্ফোরণের কারণে ওই বাড়িটির টিনের চাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাড়ির দেয়ালে গুলির চিহ্ন রয়েছে।

বাড়িটি ঘিরে রাখার পর র‍্যাব কিছুক্ষণের জন্য ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। গাড়িগুলো তখন বিকল্প পথে চলাচল করে। পরে অবশ্য মূল পথ খুলে দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।