অ্যাম্বুলেন্সকে বাধা দিল শ্রমিকরা, প্রাণ গেল শিশুর

Looks like you've blocked notifications!
পরিবহন শ্রমিকদের অবরোধের কারণে অ্যাম্বুলেন্সেই মারা গেল সাতদিনের শিশু। ছবি : সংগৃহীত

মাত্র সাতদিন হয়েছে জন্মের। সায়রা বেগমের সাতদিন বয়সী কন্যাশিশুটি আজ রোববার অসুস্থ হয়ে পড়ে। মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা জানান, দ্রুত তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার জন্য।

একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে শিশুকে নিয়ে বড়লেখা থেকে সিলেট রওনা দেন সায়রা। পথে দুই বার বাধা দেয় ধর্মঘট ডাকা পরিবহন শ্রমিকরা। সিলেটে হাসপাতালে পৌঁছাতে পারেনি শিশুটি। তার আগেই নিথর হয়ে যায় শিশুটির দেহ। বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।

জানা যায়, শিশুটির মা সায়রা বেগম মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার সদর ইউনিয়নের আজমির এলাকার বাসিন্দা। তাঁর স্বামী কুটন মিয়া দুবাই থাকেন। তাঁর সাতদিন বয়সি অসুস্থ শিশু ও শিশুর চাচা আকবর আলী ফুল মিয়াকে নিয়ে আজ সকাল ৯টার দিকে বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান।

বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আহমদ হোসাইন জানান, শিশুটির উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল এবং এজন্য তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দ্রুত নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

একটি প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে তারা সিলেটের উদ্দেশে যাত্রা করে। তবে পথে দুইবার বাধা দেয় পরিবহন শ্রমিকরা। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ায় পথেই শিশুটি মারা যায়।

এ ব্যাপারে শিশুটির চাচা আকবর আলী ফুল মিয়া জানান, সকাল সাড়ে ১০টায় তাঁরা অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে সিলেট এম এ জি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশে যাত্রা করেন। পথে প্রথমে বড়লেখা উপজেলার দাশের বাজার এলাকায় প্রায় আধাঘণ্টা আটকে রাখে অবরোধকারী শ্রমিকরা। সেখান থেকে অনেক অনুরোধ করে ছাড়া পেতে হয়। সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার চান্দ্রগ্রাম এলাকায় আবারও বাধা দেয় পরিবহন শ্রমিকরা। সেখানে অবরোধকারী পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার দেড়ঘণ্টা পর শিশুটির অবস্থা খারাপ হলে তারা গাড়িটি ছেড়ে দেয়। এ সময় সায়রা ও আকবর লক্ষ্য করেন শিশুটির নড়াচড়া বন্ধ হয়ে গেছে। বেলা ২টার দিকে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ব্যাপারে বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিনুল হক  বলেন, ‘ঘটনাটা শুনেছি। তবে কেউ এ ব্যাপারে এখনো কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’