একদিকে সংলাপ, অন্যদিকে মোমবাতি নিয়ে মানববন্ধন

Looks like you've blocked notifications!
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণভবনের সামনে মোমবাতি নিয়ে মানববন্ধন করেন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার কর্মী-সমর্থকরা। ছবি : এনটিভি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংলাপ অর্থবহ করতে গণভবনের সামনে মোমবাতি নিয়ে মানববন্ধন করেছেন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার কর্মী-সমর্থকরা। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণভবনে ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোট সরকারের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপ চলার সময় এই মানববন্ধন করা হয়।

কর্মী-সমর্থকরা ‘সংবিধান ওহি নয়, জনগণের জন্যই সংবিধান’, ‘জনগণ ভোট দিতে চায়, ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে ফলপ্রসূ সংলাপ চাই’, ‘সংবিধান জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাধা নয়’ ইত্যাদি স্লোগান সংবলিত প্ল্যাকার্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেয়।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপ শুরু হয়। প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী দুই জোটের মধ্যে সংলাপ হয়। ১৪ দলীয় জোটের পক্ষে সংলাপে নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্যদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্ব দেন ড. কামাল হোসেন।

গণভবনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর তাঁর সূচনা বক্তব্য দিয়ে শুরু হয় সংলাপ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে এই অনুষ্ঠানে আপনারা এসেছেন, গণভবন ও জনগণের এই ভবনে আপনাদের স্বাগত।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জন্য যে আর্থসামাজিক উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছি এবং দীর্ঘ সংগ্রামের পথ পাড়ি দিয়ে গণতন্ত্র অব্যাহত রেখেছি। সেক্ষেত্রে এই বাংলাদেশের উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রাখবে বলে মনে করি। এ ছাড়া এই দেশটা আমাদের সবার। মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করা, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং দেশের সার্বিক উন্নয়ন-এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। আমি এটা বিচারের ভার আপনাদের ওপর ছেড়ে দেব। দীর্ঘ ৯ বছর ১০ মাস হতে চলল, আমরা এই সময়ের মধ্যে দেশে কত উন্নয়ন করতে পেরেছি সেটা নিশ্চয়ই আপনারা বিবেচনা করে দেখবেন। এতে এটুকু বলতে পারি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ভালো আছে। তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটছে। দিনবদলের যে সূচনা করেছিলাম সেই দিনবদল হচ্ছে। এটাকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাস্তবায়ন বাস্তবায়ন করে। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা। আমাদের মহান নেতা জাতির পিতার নেতৃত্বে আমরা এ স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আজকে সেই স্বাধীনতার সুফল যেন, প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাতে পারে সেটাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্যে। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করছি।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে গণভবনে প্রবেশ করেন ১৪ দলের নেতারা। এর ২০ মিনিট পর প্রবেশ করেন ড. কামাল হোসেনসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।

এদিকে সংলাপে অংশ নিতে বিকেল ৪টায় ড. কামাল হোসেনের বাসায় বৈঠক করেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। বৈঠকে সংলাপের এজেন্ডা ঠিক করা হয়।

এর আগে গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে চিঠি পেয়ে সংলাপে যেতে ১৬ নেতাকে নির্বাচন করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। আর সংলাপ শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে আজ আরো পাঁচজনকে যুক্ত করে তারা। ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে দেওয়া এক চিঠিতে এই বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

সিদ্ধান্ত হয়, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, গণফোরামের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোকাব্বির খান, জগলুল হায়দার আফ্রিক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ও ম শফিকুল্লাহও যোগ দেবেন সংলাপে। এঁদের মধ্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ছাড়া অন্যরা সংলাপে যোগ দেন।

সংলাপে ১৪ দলের পক্ষে যাঁরা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সংলাপে যোগ দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, মো. আবদুর রাজ্জাক, কাজী জাফর উল্যাহ, আবদুল মতিন খসরু ও রমেশ চন্দ্র সেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, দীপু মনি, আবদুর রহমান ও জাহাঙ্গীর কবির নানক, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম, আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও জাসদের একাংশের সভাপতি মইন উদ্দীন খান বাদল।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে যাঁরা

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে সংলাপে অংশ নেন দলের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফা মোহসীন মন্টু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোকাব্বির খান ও জগলুল হায়দার আফ্রিক এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ও ম শফিকুল্লাহ, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস ও ড. আবদুল মঈন খান, জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, সহসভাপতি তানিয়া রব, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না ও এস এম আকরাম, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আ ব ম মোস্তফা আমিন, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।