‘এই ক্রান্তিলগ্নে তরিকুল ইসলাম চলে গেলেন, অপূরণীয় ক্ষতি হলো’

Looks like you've blocked notifications!
আজ সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টনে তরিকুল ইসলামের জানাজার পর কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : এনটিভি

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের মৃত্যুতে দেশ ও জাতির অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। আজ সোমবার তরিকুল ইসলামের জানাজায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে, দলের এই কঠিন সময়ে তরিকুল ইসলাম সাহেব, আমাদের মাঝ থেকে চলে গেলেন। এটা আমাদের জন্যে, দলের জন্যে এবং জাতির জন্যে একটা অপূরণীয় ক্ষতি হলো।’

গতকাল বিকেল ৫টা ৫ মিনিটে তরিকুল ইসলাম ইন্তেকাল করেন। পরে আজ  সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ে তাঁর মরদেহ আনা হয়। সেখানে তরিকুল ইসলামের প্রথম জানাজা হয়।

এ সময় বর্ষীয়ান এই নেতাকে শেষবারের মতো দেখতে সেখানে ভিড় করেন হাজারো নেতাকর্মী এবং তাঁর সহকর্মীরা। পরে কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত জানাজায় অংশ নেন বিএনপি মহাসচিবসহ দলের নেতাকর্মীরা। দোয়া আর ফুলেল শ্রদ্ধায় তরিকুল ইসলামকে বিদায় জানান সবাই।

এরপর তরিকুল ইসলামের মরদেহ নেওয়া হয় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায়। সেখানে তরিকুল ইসলামের দ্বিতীয় জানাজায় অংশ নেন সাবেক ও বর্তমান সংসদ সদস্য এবং মরহুমের দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা।

জানাজা শেষে জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আসম ফিরোজ, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ নুরুল ইসলাম ওমর মরহুমের কফিনে শ্রদ্ধা জানান। পরে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর গ্রামের বাড়ি যশোরে।

সোমবার সকালে নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ছবি : এনটিভি

জানাজায় অংশ নিতে এসে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, ‘মাওলানা ভাসানী যখন ন্যাপ তৈরি করেন, তখন মশিউর রাহমান জাদু ভাইয়ের নেতৃত্বে উনি বিএনপিতে যোগদান করেন। দেশের কাজ করেছেন, মানুষের কাজ করেছেন।’

এ সময় তরিকুল ইসলামের বন্ধু ড. মাহবুব উল্ল্যাহ বলেন, ‘খুবই অমায়িক মানুষ ছিলেন এবং রাজনীতির জন্যে তিনি অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তাঁকে অনেক নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে।’

এরপর শেষবারের মতো বাবার হয়ে সবার কাছে ক্ষমা চান, তরিকুল ইসলামের দুই ছেলে।

তরিকুল ইসলামের ছেলে কেন্দ্রীয় বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, ‘আপনারা সকলেই আমার আব্বার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করবেন। আর দীর্ঘ চলার পথে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে, যদি কখনো কারো মনে বিন্দুমাত্র কষ্ট দিয়ে থাকেন, আমরা দুই ভাই আপনাদের কাছে করজোড়ে মিনতি করছি, আপনারা আমার বাবাকে ক্ষমা করে দিবেন।’

এ সময় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেন, ‘ভালো মানুষকে সম্মান করা এটা আমাদের সকলের কর্তব্য। তিনি একজন ভালো লোক ছিলেন। খুব ভালো রাজনীতিবিদ ছিলেন।’

তরিকুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে ফুসফুসে সংক্রমণ, কিডনি জটিলতাসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। কিডনি সমস্যার কারণে তাঁকে নিয়মিত ডায়ালাইসিস দিতে হতো। গতকাল ডায়ালাইসিস দেওয়ার সময় তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। ডায়ালাইসিস দেওয়ার সময়ই তাঁর ‘হার্ট অ্যারেস্ট’ হয়। দুপুর দেড়টার দিকে তাঁকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। বিকেল ৫টার কিছু সময় পর তিনি মারা যান। পরে সন্ধ্যায় তরিকুলের মরদেহ তাঁর শান্তিনগরের বাসভবনে নেওয়া হয়।