‘এ দেশ কোনো মহারাজা-মহারানির নয়’

Looks like you've blocked notifications!
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জনসভায় বক্তব্য দেন ড. কামাল হোসেন। ছবি : মোহাম্মদ ইব্রাহিম

জাতীয় ঐক্যের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন জুলুম নির্যাতন বন্ধের আহ্বান জানিয়ে সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, ‘এ দেশে কোনো রাজতন্ত্র নেই। এ দেশ কোনো মহারাজা-মহারানির নয়। ১৬ কোটি জনগণের এ দেশে সরকারি দলের জন্য এক আইন আর বিরোধীদের জন্য অন্য আইন, এমনটা চলতে পারে না।’

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি দাবি করে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘অবিলম্বে তাঁদের মুক্তি দিন। অন্যথায় আপনাদের কঠিন জবাব দিতে হবে।’

আজ মঙ্গলবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত জনসভায় এসব কথা বলেন ড. কামাল হোসেন।  

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আপনারা পাড়ায় পাড়ায়, মহল্লায় মহল্লায়, জেলায় জেলায় দাঁড়িয়ে যান। দেশ আবার স্বাধীন হবে। জনগণ আবার তাদের মালিকানা ফেরত পাবে।’

ড. কামাল বলেন, ‘এ দেশে যা হচ্ছে তা মেনে নেওয়া যায় না। যখন তখন যাকে তাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, আমি আজকের জনসভা থেকে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করছি। তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।’

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘যখন তখন যাকে তাকে গ্রেপ্তার করবেন? স্বাধীন দেশে এটা চলতে পারে না। আর ভোটার বিহীন সরকার তো আরো পারে না। নির্বাচিত সরকার হলেও এটি পারে না। এটি সংবিধান সম্মত নয়।’

সরকারের উদ্দেশে ড. কামাল বলেন, ‘রাস্তাঘাট বন্ধ করে, বাস লঞ্চ বন্ধ করে জনগণকে নিষ্ক্রিয় করা যাবে না। আজকের জনসভা তারই প্রমাণ। জনগণ তাদের দাবি আদায়ে ঐক্যবদ্ধ। মনে রাখবেন ইতিহাস প্রমাণ কোনো বাধা বিপত্তি এ দেশের জনগণ কখনো মেনে নেয়নি।’

ড. কামাল আরো বলেন, ‘আমাদের সবাইকে ভোট কেন্দ্রের পাহারাদার হতে হবে। ভোটের পাহারাদার হলে স্বাধীনতার পাহারাদার হওয়া যাবে। রাষ্ট্রের মালিক হিসেবে এটা আমাদের অধিকার।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা ছাড়া জনগণের দাবি আদায় সম্ভব হবে না। সবাই এক থাকলে আমাদের অধিকার আদায় হবেই। আমরা দেশের জনগণকে মুক্ত গণতন্ত্র দিব।’

সরকারের উদ্দেশে ড. কামাল বলেন, ‘তিন মাসের কথা বলে ভোট ছাড়াই পাঁচ বছর কাটিয়ে দিলেন। এটা ভাবতে অবাক লাগে। জনগণ জেগে উঠেছে- এবার ভোটের অধিকার নিশ্চিত হবেই হবে। গত পাঁচ বছরে প্রমাণ হয়েছে- সরকারের কথার এক পয়সারও দাম নেই।’

সমাবেশে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আজকের এ সমাবেশে যাতে লোকজন আসতে না পারে সেজন্যই সরকার বাস, লঞ্চ বন্ধ করাসহ সব জায়গায় ব্যারিকেড তৈরি করেছে। পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে সমাবেশে আগত লোকদের হয়রানি করেছে। এরপরও হেঁটে লোকজন আজকের এ সমাবেশে উপস্থিত হয়ে প্রমাণ করেছে সরকারের প্রতি দেশের মানুষের বিন্দুমাত্র আস্থা নেই।’

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে বক্তব্য দেন জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মুনসুর আহমেদ, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফা মোহসীন মন্টু, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন, সেলিমা রহমান, বরকত উল্লাহ বুলু, মো. শাজাহান, শামসুজ্জামান দুদু, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, জয়নুল আবদীন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, ড. সুকোমল বড়ুয়া, আবদুস সালাম, আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রমুখ।