প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো বিজ্ঞাপন নিয়ে প্রশ্ন রিজভীর

Looks like you've blocked notifications!
বুধবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ছবি : এনটিভি

নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পরও প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো টেলিভিশন বিজ্ঞাপন প্রচারের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

রিজভী বলেন, “টিভি খুললেই দেখছি, অনেক চ্যানেলে ‘থ্যাঙ্ক ইউ পিএম’ বিজ্ঞাপন চলছে। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচারে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে কি না?”‌

আজ বুধবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘কিছু বিজ্ঞাপনের পর বোঝাও যায় না, বিজ্ঞাপনদাতা কে? আবার কিছু বিজ্ঞাপনের পর বোঝা যায় বিজ্ঞাপনদাতা মন্ত্রণালয়।’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‌‘নির্বাচন সামনে রেখে এখন কেন সরকারি অর্থে এ ধরনের প্রচার চালু রাখা হচ্ছে? এ বিজ্ঞাপন তো দেশের মানুষের ট্যাক্সের টাকায় প্রচারিত হচ্ছে। আর বিজ্ঞাপন প্রচার করে আওয়ামী লীগ ভোটের সুবিধা নেবে। এটা নির্বাচন আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমে সরকারি টাকায় আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। এটার মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণায় সমান সুযোগের বিধান লঙ্ঘন করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন এসব দেখেও না দেখার ভান করছে।’

নির্বাচন কমিশন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ

করতে চায় বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।

‌‘এ জন্য ভোটকেন্দ্র থেকে সংবাদমাধ্যমগুলোকে সরাসরি সম্প্রচার বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রিটার্নিং অফিসারদের এ নির্দেশনা দেন নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম। নির্দেশনাগুলো হলো,

প্রিসাইডিং অফিসারের অনুমতি ছাড়া কোনো ভোটকক্ষে প্রবেশ করা যাবে না। একসঙ্গে পাঁচজনের বেশি সাংবাদিক প্রবেশ করতে পারবে না। ১০ মিনিটের বেশি কেন্দ্রে অবস্থান করতে পারবে না। ভোটকক্ষে নির্বাচনী কর্মকর্তাসহ কারো সঙ্গে আলাপ করতে পারবে না। নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। কোনো প্রকার নির্বাচনী উপকরণ স্পর্শ বা অপসারণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। প্রার্থী বা রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে কোনো ধরনের কর্মকাণ্ড হতে বিরত থাকতে হবে। সংবিধান, নির্বাচনী আইন ও বিধিবিধান মেনে চলতে হবে।

সাংবাদিককে পরিচয়পত্রের উল্টো পিঠের সব নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।‌‌’

বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি বর্তমান ইলেকশন কমিশন সরকারের খয়ের খাঁ। সরকারের হুকুমে নানা নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে কমিশন। এমনিতে একের পর এক কালাকানুন তৈরি করে গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করছে সরকার। গণমাধ্যমের ওপর চলছে সরকারি নিবর্তনমূলক খড়গ। এ ছাড়া বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা প্রতিনিয়ত মিডিয়া ওয়াচের নামে ধমকিয়ে যাচ্ছে। ভোট ডাকাতি ও ভোট কারচুপির খবর যাতে প্রকাশ না হতে পারে, ভোট সন্ত্রাসের খবর যাতে প্রকাশ না হতে পারে, সে জন্যই গণমাধ্যমকে সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণের জন্যই এ কঠোর নীতিমালা।’

এখনো সরকারের নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মামলা, গ্রেপ্তার ও বাড়িতে বাড়িতে হামলা ও হুমকি-ধমকি অব্যাহত রয়েছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘গতকালও একজন নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্বাচন কমিশনের অধীনে আনা দরকার। কমিশনারের কথায় পরিষ্কার হলো যে কমিশনের কথা মানছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।’

রিজভী অভিযোগ করেন, ‘বিতর্কিত কর্মকর্তাদের এখনো গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন রাখা হয়েছে, যারা গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট ডাকাতিতে সহায়তা করেছে। এ ছাড়া দলীয় ক্যাডারদের বেছে বেছে নির্বাচনী গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে। নিরপেক্ষ কর্মকর্তাদের দিয়ে নির্বাচনী প্রশাসন না সাজালে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হবে না।‌‌’