নির্বাচন তিন সপ্তাহ পেছানোর দাবি

Looks like you've blocked notifications!
নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : স্টার মেইল

বিএনপির মহাসচিব ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন,  ‘আমরা নির্বাচন তিন সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছি। তারা (নির্বাচন কমিশন) বলেছে, এটা বিবেচনা করে দেখবে।’

আজ বুধবার নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর আগে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।  

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা নির্বাচন একেবারেই ইভিএম ব্যবহার করা যাবে না বলে জানিয়েছিলাম। তাঁরা বলেছেন, তাঁরা সব কেন্দ্রে বা বড় পরিসরে ব্যবহারের কথা চিন্তা করছেন না। তাঁরা শুধু সিটি করপোরেশনগুলোতে সীমিত সংখ্যক ইভিএম ব্যবহার করার কথা চিন্তা করছেন। এটাও বলেছেন, আমরা যদি তাদের বোঝাতে পারি ইভিএম পদ্ধতি পুরোপুরিভাবে নিরাপদ নয়, সিকিউরড না তাহলে তাঁরা সেটাও বিবেচেনা করবেন।’

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘আমরা নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের কথা বলেছিলাম। তাঁরা বলেছেন, এটা আমরা ইতিমধ্যে চিন্তা করে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রতি কেন্দ্রে ব্যবহার করা যাবে কি না- এ ব্যাপারে তাঁরা বিবেচনা করবেন। আমরা খালেদা জিয়ার মুক্তির কথা বলেছি। তাঁকে ছাড়া এটা ফলপ্রসূ হবে না। তাঁরা বলেছেন তাঁরা বিষয়টা দেখবেন। এর চাইতে বেশি কিছু বলেননি।’

এ ছাড়া জনপ্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনে রদবদল, হয়রানিমূলক মামলা, গায়েবি মামলার প্রত্যাহার, কারাবন্দি নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির ব্যাপারে ইসি তালিকা চেয়েছেন বলে ফখরুল জানান। আর এখন পুলিশ যাতে রাজনৈতিকভাবে কাউকে গ্রেপ্তার না করে সে বিষয়ে ইসির নির্দেশনা চেয়েছেন বলেও জানান বিএনপির মহাসচিব।

এ ছাড়া নির্বাচনী এজেন্টদের নিরাপত্তা, পর্যবেক্ষকদের বাধা থাকবে না বলে ইসি ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের জানিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জানান মির্জা ফখরুল।

এ সময় বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘মোট কথা তাঁরা সবই শুনেছেন, প্রত্যেকবারই শোনেন। কিন্তু কতটুকু বাস্তবায়ন করবেন তা জনগণ ও সাংবাদিকরা দেখবেন। তাঁরা যদি সত্যিকারের দায়িত্ব পালন করেন, তাহলে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে। আর আমাদের বিরোধী দলের নির্বাচনে টিকে থাকাটা তাদের আচরণের ওপর নির্ভর করছে।’

আজ নয়াপল্টনে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচনে টিকে থাকার প্রথম ধাপটা একেবারেই ভালো লক্ষণ নয়, শুভলক্ষণ নয়। আমি ভাই সামগ্রিকভাবে কথা বলে দেই, আমাদের থাকা না থাকাটা নির্ভর করছে নির্বাচন কমিশন ও বর্তমানে যে নির্বাচনকালীন সরকার রয়েছে তাদের আচরণের ওপর।’

এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ব্যবহার করে নির্বাচনী প্রচারণা সম্পর্কে বৈঠকে কথা হয়েছে বলেও ফখরুল জানান। এ বিষয়টিও দেখবে বলে জানিয়েছে ইসি।

এদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘আমাদের যে প্রশ্নগুলো ছিল, অভিযোগগুলো ছিল, সেগুলো আমরা তুলে ধরেছি। ইসি এ ব্যাপারে সাহায্য সহযোগিতা করবেন। যাতে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেশে হয়।’

আজকের এই বৈঠক থেকে কী ফল আশা করছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘সেটা আসলে বোঝা যাবে আমরা যেসব কথা বলেছি সেগুলোর সবগুলোর নোট নিয়েছেন তাঁরা। অনেকগুলো কথার জবাবে বলেছেন, বিবেচনা করে আলোচনা করে, কি করা যায় সেটা তাঁরা করবেন। পরে আমরা তা বুঝতে পারব।’

ইসির সঙ্গে আজকের আলোচনায় অংশ নেন ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, আবদুল মালেক রতন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের কাদের সিদ্দিকী, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মহসিন মন্টু, মোকাব্বির খান, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, এস এম আকরাম, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সুলতান মো. মনসুর আহমদ প্রমুখ।