জব্বারের রায় পড়া শুরু
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার আবদুল জব্বারের রায় পড়া শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৮ মিনিটে ১৪৮ পৃষ্ঠা রায়ের সংক্ষিপ্ত অংশ পড়া শুরু করেন।
রায়ের প্রথম অংশ পড়া শুরু করেছেন বিচারপতি আনোয়ারুল হক। দ্বিতীয় অংশ পড়বেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন। চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করবেন ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম।
আবদুল জব্বার পলাতক আছেন। তাঁর অনুপস্থিতিতেই রায় পড়ছেন ট্রাইব্যুনাল। গতকাল সোমবার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়। এর আগে গত বছরের ৩ ডিসেম্বর রায়ের জন্য মামলাটি অপেক্ষমাণ রাখেন ট্রাইব্যুনাল।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২৪ জন সাক্ষী হাজির করে। তবে আসামিপক্ষ কোনো সাক্ষী হাজির করতে পারেনি। গত বছরের ২৯ এপ্রিল মামলার তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে জমা দেয় তদন্ত সংস্থা।
যত অভিযোগ
২০১৪ সালের ১৪ আগস্ট আবদুল জব্বারের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, ধর্মান্তরকরণ, লুটপাটসহ পাঁচটি অভিযোগ গঠন করা হয়। এর মধ্যে ৩৬ জনকে হত্যা ও গণহত্যা, ২০০ জনকে জোর করে ধর্মান্তরিত করা, ৫৫৭টি লুট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
প্রথম অভিযোগ : ১৯৭১ সালে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার ফুলবাড়ীতে দুই মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেন আবদুল জব্বার। এ ছাড়া নাথপাড়া ও কুলুপাড়ার শতাধিক বাড়িতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেন।
দ্বিতীয় অভিযোগ : ফুলবাড়ীতে একজনকে হত্যা ও ৩৬০টি বাড়িতে লুট-অগ্নিসংযোগ।
তৃতীয় অভিযোগ : নলি এলাকায় ১১ জনকে হত্যা ও ৬০টি বাড়িতে লুট করে অগ্নিসংযোগ।
চতুর্থ অভিযোগ : প্রায় ২০০ হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে জোর করে ধর্মান্তরিত করা।
পঞ্চম অভিযোগ : আঙুল কাটা ও মঠবাড়িয়া থেকে ৩৭ জনকে আটক, লুট, নির্যাতন এবং ২২ জনকে হত্যা।
আবদুল জব্বারের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণ করার দাবি করে প্রসিকিউটর জাহিদ ইমাম আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশা করেন। অন্যদিকে, সরকার নিয়োজিত আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. আবুল হাসান সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, আবদুল জব্বারের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি প্রসিকিউশন। শুধু শান্তি কমিটির স্থানীয় চেয়ারম্যান হিসেবে ‘সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটির’ অভিযোগ আনা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। এ জন্য তিনি আশা করেন, আসামি মামলা থেকে খালাস পাবেন। তবে আসামিপক্ষের কোনো আত্মীয়-স্বজন কাছ থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতা পাননি বলে জানান আবুল হাসান।