‘ওপরের নির্দেশে’ হত্যাচেষ্টা মামলা নিচ্ছে না পুলিশ
সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলায় দলীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে কুপিয়ে আহত করেছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও পুলিশ ‘ওপরের নির্দেশে’ মামলা নিচ্ছে না।
গত ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দুর্বৃত্তরা পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিরঞ্জন কুমার পালকে। এ ঘটনায় তিনি আওয়ামী লীগের উপজেলা কমিটির বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ রিয়াজউদ্দিন ও তাঁর সহযোগীদের দায়ী করেন।
আজ মঙ্গলবার এ ঘটনা নিয়ে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রাশেদ ঢালি বলেন, ‘গত ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আমরা বসেছিলাম। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক নীলকণ্ঠপুর গ্রামের শেখ রিয়াজউদ্দিন ও তাঁর সহযোগীরা ধারালো দা ও লাঠিসোটা নিয়ে নিরঞ্জন কুমার পালের ওপর হামলা চালায়। তারা তাঁকে হত্যার উদ্দেশে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে চলে যায়। বাধা দেওয়ায় আমরা বেশ কয়েকজন আহত হই। রিয়াজের লোকজন দলীয় অফিসের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে বীরদর্পে চলে যায়।’
নিরঞ্জনকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তিনি এখনো সেখানে চিকিৎসাধীন।
রাশেদ আরো জানান, ঘটনার দিন সকালে ঈদ উপলক্ষে সাধারণ মানুষজনকে চাল দেওয়ার সময় শেখ রিয়াজউদ্দিনের সমর্থক আবুল বাসার ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদারকে মারধর করেন। এর প্রতিবাদে তাঁকে ধমক দিলে আবুল বাসার দলের সাধারণ সম্পাদক নিরঞ্জন পালকেও মারধর করেন। বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম আবুল বাসারকে একটি কক্ষে আটকে রেখে থানায় খবর দিলে পুলিশ বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়ে যায়। ওই দিন সন্ধ্যায় রিয়াজের নেতৃত্বে দ্বিতীয় দফায় নিরঞ্জন পালের ওপর হামলা করা হয়।
রাশেদ অভিযোগ করে বলেন, ‘এ ব্যাপারে নিরঞ্জন কুমার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা শেখ রিয়াজউদ্দিন, শেখ সিদ্দিকুর, আমির হামজা, কিংকর দেবনাথ, মামুনুর রশিদ, আবদুল ওহাব, ফিরোজ লস্কর, জাকির হোসেন, নুরুজ্জামানসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা চেষ্টা মামলার জন্য লিখিত অভিযোগ করেন। অথচ পুলিশ মামলা রেকর্ড করা নিয়ে এখনো বাহানা করছে।’ তিনি আরো জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ ওয়াহেদুজ্জামান থানায় গিয়ে মামলাটি রেকর্ড করার কথা বললেও পুলিশ তাতেও গুরুত্ব দেয়নি।
তবে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘মামলা না নেওয়ার জন্য ওপরের চাপ রয়েছে। বিষয়টি দলের জেলা সভাপতি মুনসুর আহমেদ মিটমাট করে দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।’ তবে মিটমাট না হলে মামলা রেকর্ড করা হবে বলেও জানান ওসি।