এক মাস ধরে আত্রাই-নওগাঁর সড়ক যোগাযোগ বন্ধ
বন্যায় সড়ক ভেঙে যাওয়ায় নওগাঁর জেলা সদরের সঙ্গে আত্রাই উপজেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ এক মাস ধরে বন্ধ আছে। এক মাস পার হলেও সড়কের ভাঙা স্থানের মেরামত হয়নি। এতে বাড়ছে জনদুর্ভোগ।
এদিকে, সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) জানিয়েছে, এখনো বন্যার পানি না সরায় মেরামত কাজে দেরি হচ্ছে। বন্যায় ভেঙে যাওয়া অংশ মেরামত করতে আরো দুই মাস সময় লাগবে।
আত্রাই উপজেলা থেকে বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রতিদিন শত শত মানুষ নওগাঁ জেলা সদরে যাতায়াত করে থাকে। এ ছাড়া নওগাঁ জেলা থেকে আত্রাইয়ে বিভিন্ন কার্যালয়ে কর্মরত ব্যক্তিদের আত্রাইয়ে আসতে হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন সড়ক মেরামতের কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় বাসিন্দারা চরম ভোগান্তিতে পড়েছে।
চলতি বছর আগস্ট মাসে আত্রাই উপজেলার আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা দেখা দেয়। বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় গত ২৩ আগস্ট সকালে আত্রাই-নওগাঁ সড়কের মির্জাপুর নামক স্থানে বাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়। এরপরই নওগাঁ জেলা সদরের সঙ্গে আত্রাইয়ের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার পর স্থানীয় বাসিন্দারা সিএনজিচালিত অটোরিকশার মাধ্যমে মির্জাপুর থেকে শাহাগোলা হয়ে নওগাঁর বিকল্প একটি রাস্তা ব্যবহার করে। কিন্তু পরে শাহাগোলা রাস্তাটি বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় এবং কয়েক জায়গায় ভেঙে যাওয়ায় এ রাস্তাও বন্ধ হয়ে যায়।
এখন ৩০ কিলোমিটার রাস্তা অতিরিক্ত আরো ২০ কিলোমিটার ঘুরে রানীনগর-আবাদপুকুর হয়ে কোনো রকমে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতে খরচও বেশি হচ্ছে। আবার সময়ও লাগছে অনেক বেশি। তাই এখন আত্রাইয়ের জনগণকে জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ট্রেনের ওপর নির্ভরশীল হতে হচ্ছে। দিনের প্রথম প্রহরে সান্তাহারগামী একটি আন্তনগর ট্রেন থাকলেও বিকেলে ফেরার কোনো ট্রেন নেই। তাই বিকেলের ফেরার জন্য সেই রাত পর্যন্ত যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হয়।
নওগাঁ-আত্রাই রুটে সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক রমজান আলী বলেন, ‘মির্জাপুরে বাঁধ ভাঙার ফলে আমরা নওগাঁ আত্রাই রুটে আর অটোরিকশা চালাতে পারছি না। প্রায় ২০ কিলোমিটার ঘুরে আবাদপুকুর হয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতে সময়ও অনেক বেশি লাগছে। আবার পরিবহন খরচও বেশি। এ কারণে আগের মতো আর ভাড়া পাচ্ছি না। অথচ সিএনজির ওপরই পরিবার নির্ভরশীল। ভাড়া কম পাওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে।’
এ ব্যাপারে নওগাঁ সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হামিদুল হক বলেন, ‘এখনো বন্যার পানি বিদ্যমান থাকায় সড়কটি মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া যাচ্ছে না। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মেরামতের দরপত্র আহ্বান করা হবে। তবে, কাজ সম্পন্ন করে নওগাঁ-আত্রাই সরাসরি সড়ক যোগাযোগ শুরু হতে কমপক্ষে আরো দুই মাস সময় লাগবে।’