ভৈরবে বখাটেদের হামলায় পাঁচজন আহত
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বখাটেদের হামলায় পাঁচজন আহত হয়েছেন। আহতদের ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন মো. আল-আমিন (৫০), মো. গোলাপ মিয়া (৬৮), আস্কর আলী (৭০), ফজলু মিয়া (৫০) ও বাবুল মিয়া (৪০)।
এই ঘটনায় আহত আল-আমিনের স্ত্রী ফেরদৌসী বেগম বাদী হয়ে দুই বখাটেসহ অজ্ঞাত ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে সোমবার বিকেলে ভৈরব থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। একই সঙ্গে যথাযথ প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত সাদমীনের কাছেও একটি অভিযোগ দিয়েছেন।
স্থানীয় লোকজন ও উত্ত্যক্তের শিকার পরিবার সূত্রে জানা যায়, ভৈরব উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের কালিকাপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া দুই ছাত্রী রোববার দুপুরে পরীক্ষা শেষে বাড়ি যাচ্ছিল। পথে এনামুল (২০) ও ইয়াছিন (২২) নামের দুই বখাটে তাদের বন্ধুদের নিয়ে পথরোধ করে মোবাইল নম্বর চায়। ছাত্রীরা তাদের মোবাইল নম্বর দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা ছাত্রীদের আপত্তিকর কথাবার্তা বলে। একপর্যায়ে তারা ছাত্রীদের হাত ও ওড়না ধরে টানাটানি করে। রাস্তার পাশে জমিতে কৃষি কাজ করা অবস্থায় এক ছাত্রীর চাচা বিষয়টি দেখতে পেয়ে এগিয়ে এলে বখাটেরা সটকে পড়ে।
পরে ছাত্রীর বাবা মো. আল-আমিন স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. লিয়াকত আলীকে ঘটনাটি জানালে তিনি রোববার রাতেই ভুক্তভোগী পরিবারটির সদস্যদের নিয়ে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটিকে বিষয়টি অবহিত করেন এবং বিষয়টির প্রতিকারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগের আশ্বাস দেন। পরে দুই ছাত্রীর বাবাসহ পরিবারের সদস্যরা স্কুল থেকে বের হয়ে অটোরিকশায় উঠলে ওই বখাটেদের পক্ষে ১০/১২ জন বখাটে তাদের ওপর লাঠিসোটা ও রড নিয়ে আক্রমণ চালায়। এতে করে আল-আমিনসহ ওই পাঁচজন আহত হন।
আহত অভিভাবক আল-আমিন বলেন, ওরা এলাকার মাদকাসক্ত এবং বখাটে ছেলে। তারা প্রতিদিন আমার মেয়েসহ স্কুলের ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে। তাদের অশালীন কথার প্রতিবাদ করলেই ছাত্রীদের ওড়না টেনে ধরে, গায়ে হাত দেয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কালিকাপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. লিয়াকত আলী জানান, ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাগুলো তিনি জানেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত অভিভাবকদের লিখিত আকারে অভিযোগটি জানাতে অনুরোধ করেছেন। সেটি পাওয়ার পর বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগী হবেন।
কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি জেনেছি। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। সুষ্ঠু বিচারসহ আইনি প্রতিকার পেতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটিকে আমার পরিষদের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে।
একটি লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে তিনি বিষয়টি জেনে তাৎক্ষণিক থানা-পুলিশকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ভৈরবের ইউএনও ইসরাত সাদমীন।
ভৈরব থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. বাহালুল খাঁন বাহার জানান, সোমবার বিকেলে বাদীর অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে অপরাধীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হয়েছে। কিন্তু অপরাধীরা পালিয়ে যাওয়ায় গ্রেপ্তার সম্ভব হয়নি। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশী তৎপরতা অব্যাহত আছে।