গাজীপুরে আ.লীগ-বিএনপির পাল্টাপাল্টি হামলা, অগ্নিসংযোগের অভিযোগ

Looks like you've blocked notifications!
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় নির্বাচনী গণসংযোগকালে প্রতিপক্ষের কর্মীদের আগুনে দগ্ধ মোটরসাইকেল। ছবি : এনটিভি

গাজীপুরের নির্বাচনী গণসংযোগ চলাকালে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পাল্টাপাল্টি হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলায় উভয়পক্ষের কয়েকশ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। বুধবার কালিয়াকৈর উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।

কালিয়াকৈর পৌর বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-শ্রমবিষয়ক সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবীর খান জানান, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ আমাদের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করা হয়। সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মজিবুর রহমান, সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ, রিজভী আহম্মেদ দুলালসহ আমাদের কয়েকশ নেতাকর্মী গাজীপুর-১ আসনের বিএনপি প্রার্থী চৌধুরী তানবীর আহমেদ সিদ্দিকীকে নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। এ সময় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা ওই এলাকায় ২০ থেকে ২৫টি মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দিতে থাকেন। বিএনপির নেতাকর্মীরা বাজারের ভেতর গণসংযোগ করে বেলা ১১টার দিকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে একটি মার্কেটের সামনের পৌঁছালে আওয়ামী লীগের কর্মীরা নৌকার স্লোগান দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় আওয়ামী লীগের একটি মিছিল থেকে কর্মীরা বিএনপির প্রার্থীর মাইক্রোবাসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। তাদের হামলায় বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার পর বিএনপি নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা এ ধরনের হামলা চালিয়ে নির্বাচনের পরিবেশ বানচালের চেষ্টা করছে।

এই হামলার প্রতিবাদে কালিয়াকৈর উপজেলা ও পৌর বিএনপির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপি।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির প্রার্থী চৌধুরী তানবীর আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, ‘নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকলে প্রচারণা করা সম্ভব নয়। বিএনপির শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী গণসংযোগ চলাকালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সমর্থক নেতাকর্মীরা নৌকার মিছিল নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। বিষয়টিতে প্রশাসন ও নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ দাবি করছি।’

তানবীর আহমেদ সিদ্দিকী আরো বলেন, নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি না হলে ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবে না। আর ভোটাররা ভোট দিতে পারলে এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মুজিবর রহমান, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ প্রমুখ।

অন্যদিকে কালিয়াকৈর পৌর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আজ বুধবার দুপুরে সফিপুরে পৌর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিকদার মোশারফ হোসেন, জেলা আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেলিম আজাদ, কালিয়াকৈর পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সাবেক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াহাব মিয়া, পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম তুষার প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বিএনপির গণসংযোগে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিএনপি জামায়াত কর্মীরাই আওয়ামী লীগের শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালে হামলা চালিয়েছেন এবং তাদের নেতাকর্মীদের আহত করেছেন। বিএনপির কর্মীরা হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের একটি মাইক্রোবাস ও একটি  মোটরসাইকেলে ভাঙচুর করে এবং আগুন ধরিয়ে দেয়।

কালিয়াকৈর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সানোয়ার জাহান বলেন, আজ সকালে উভয়পক্ষই সফিপুরে নির্বাচনী গণসংযোগ করছিলো। একপর্যায়ে গণসংযোগ থেকে বিএনপির কর্মীরা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের কটাক্ষ করেন ও তাদের ওপর হামলা চালান। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এরপর দুপুরে কালিয়াকৈর উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ ব্যাপারে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।