লালমোহনে আ.লীগ-বিএনপির সংঘর্ষ, গাড়িতে আগুন
ভোলার লালমোহন উপজেলায় আজ শনিবার আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়েছে। এ সময় বেশ কয়েকটি গুলি ছোড়া হয়। এতে উভয়পক্ষের অন্তত অর্ধশত লোক আহত হয়েছে। আহতদের লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন স্থানে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
থানা পুলিশ এবং প্রার্থীদের অভিযোগে জানা যায়, ভোলা-৩ আসনের বিএনপির প্রার্থী মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ আজ সকালে ঢাকা থেকে লালমোহনে আসেন। দুপুর আড়াইটার দিকে তাঁর সমর্থকরা উপজেলার প্রধান সড়কে মিছিল বের করেন। এ সময় একই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের লোকজন পাল্টা মিছিল বের করেন। মিছিলে স্লোগান দেওয়া নিয়ে দুইপক্ষ একে অপরের ওপর হামলা চালায়। শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ। একপর্যায়ে সংঘর্ষ আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সবার মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দফায় দফায় চলা সংঘর্ষের সময় মেজর হাফিজের বাসার সামনে দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সংঘর্ষ চলাকালে বেশ কয়েকটি গুলি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দুই ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া এবং দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে দীর্ঘ সময় চেষ্টার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শেষ খবর পর্যন্ত লালমোহনে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। দুইপক্ষ দুই দিকে অবস্থান নিয়ে আছে।
লালমোহন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খাইরুল কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে গুলির খবর জানা নেই। লোকের মুখে শুনেছি।
এদিকে ভোলা-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী ও দলটির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমদ হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগকে দায়ী করে বলেন, তারা বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে হামলা করিয়েছে। নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে এসেছে ঢাকা থেকে। এসব সন্ত্রাসীরা বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে হুমকি দিচ্ছে আর দলে যোগদান করাচ্ছে।
তবে হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, যারা ভয় পেয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছে তারা তাদের ঘরে ফিরে আসুক, তাদের জন্য সব সময় দরজা খোলা। আমরা সবাই ভাই ভাই। তাই ঐক্যবদ্ধভাবে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করি।
তজুমদ্দিনে তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করে উল্টো তাঁর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেন হাফিজ উদ্দিন আহমদ।
ভোলার লালমোহন উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সংঘর্ষ চলাকালে মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ছবি : এনটিভি
অপরদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সাংসদ নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন বলেন, মেজর হাফিজ নির্বাচন বানচাল করার জন্য ২০০১ সালের মতো ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। হেলমেট বাহিনী দিয়ে তাঁর লোকজন ও পথচারীদের ওপর হামলা করেছে। তাঁর দলীয় লোকজনের হাত-পা ভেঙে দিয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় কয়েকজনকে হাসপাতালে এবং ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।