সন্ধ্যায় আসছে আমজাদ হোসেনের মরদেহ

Looks like you've blocked notifications!

বরেণ্য নির্মাতা আমজাদ হোসেনের মরদেহ আজ শুক্রবার ঢাকায় এসে পৌঁছানোর কথা সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে। সাত দিন ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালের মর্গে থাকার পর নন্দিত এই পরিচালকের মরদেহে অবশেষে ঢাকায় আসছে বলে এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন নির্মাতা ও ডিরেক্টস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক এস এ হক অলিক।

আমজাদ হোসেনের মরদেহ বিমানবন্দর থেকে সরাসরি নেওয়া হবে তাঁর মোহাম্মদপুরের আদাবরের বাড়িতে। এরপর তাঁর মরদেহ বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হবে। আগামীকাল শনিবার বেলা ১১টায় মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বাদ জোহর মরদেহ নেওয়া হবে এফডিসিতে। সেখানে জানাজা শেষে প্রথমে এটিএন বাংলা ও এরপর চ্যানেল আই কার্যালয়ে মরদেহ নেওয়া হবে। চ্যানেল আই কার্যালয়ে আরেকটি জানাজা হবে। তবে কোথায় মরদেহ দাফন করা হবে, সেটা এখনো চূড়ান্ত হয়নি বলে জানান এস এ হক অলিক।

ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে সব ধরনের প্রশাসনিক কাজ আগে শেষ হলেও মরদেহ দেশে আনার ব্যাপারে আর্থিক জটিলতা তৈরি হয়। আমজাদ হোসেনের চিকিৎসা বাবদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে পাওয়া ৪২ লাখ টাকার অনুদান খরচ হয়। এ ছাড়া আরো ৬১ লাখ টাকা খরচ হয়। সব অর্থ পরিশোধ করেই এই নির্মাতার মরদেহ দেশে আনা হচ্ছে।

বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেন গত ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৫৭ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে মারা যান।

গত ১৮ নভেম্বর রোববার সকাল ৯টার দিকে আমজাদ হোসেনের স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার তাঁকে (আমজাদ হোসেন) বিছানার নিচে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। কখন তিনি অচেতন হয়েছেন, তা আঁচ করতে পারেননি সুরাইয়া আক্তার। এরপর সকাল ১০টার দিকে তাঁকে ইমপালস্ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারপর হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। চিকিৎসকরা জানান, রোববার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় আমজাদ হোসেনের। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ২৭ নভেম্বর রাত আড়াইটার দিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে ব্যাংকক নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর হার্টবিট, ব্লাডপ্রেশার এবং কিডনি ইনফেকশনের জন্য ডায়ালাইসিস চলেছিল বলে জানান তাঁর ছেলে সোহেল আরমান।

আমজাদ হোসেন অভিনেতা, পরিচালক হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন। ১৯৬১ সালে ‘হারানো দিন’ চলচ্চিত্রে অভিনয় দিয়ে চলচ্চিত্র শুরু করেন তিনি। পরে চিত্রনাট্য রচনা ও পরিচালনা শুরু করেন।

প্রথম পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘আগুন নিয়ে খেলা’, ছবিটি পরিচালনা করেন ১৯৬৭ সালে। পরিচালক হিসেবে ‘নয়নমণি’ (১৯৭৬), ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ (১৯৭৮), ‘ভাত দে’ (১৯৮৪) তাঁর উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র।

‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ ও ‘ভাত দে’ চলচ্চিত্রের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও অর্জন করেন। সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদক (১৯৯৩) ও স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে।

এ ছাড়া সাহিত্য রচনার জন্য তিনি ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে দুবার অগ্রণী শিশু সাহিত্য পুরস্কার ও ২০০৪ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।