এ পুরস্কার জনগণের : প্রধানমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
আজ শনিবার বিকেলে গণভবনের প্রধান প্রবেশমুখের সিঁড়িতে বিশিষ্ট লেখক ও কবি সৈয়দ শামসুল হক ও সংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। ছবি : ফোকাস বাংলা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে দুটি সম্মানজনক পুরস্কার লাভের সাফল্যকে জাতি ও দেশবাসীর জন্য সম্মান বলে অভিহিত করেছেন। তিনি আজ শনিবার ঢাকায় পৌঁছার মুহূর্তে সর্বস্তরের জনগণের প্রাণঢালা শুভেচ্ছা, ভালোবাসা ও অভিনন্দন পেয়ে এ অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন।

বিকেলে গণভবনের প্রধান প্রবেশমুখের সিঁড়িতে বিশিষ্ট লেখক ও কবি সৈয়দ শামসুল হকের কাছ থেকে ফুলের তোড়া গ্রহণ করার পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এসব পুরস্কার জাতির জন্য একটি সম্মান এবং জনগণকেই এর কৃতিত্ব দেওয়া উচিত।’

প্রধানমন্ত্রী গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে বিশ্বের সর্বোচ্চ পরিবেশবিষয়ক পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন্স অব দি আর্থ’ এবং আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের কাছ থেকে ‘আইসিটি টেকসই উন্নয়ন পুরস্কার’ গ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী সিলেট থেকে আজ বেলা ১টা ৫ মিনিটে ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার পর বেলা ২টা ৮ মিনিটে গণভবনে পৌঁছান। শ্রেণি-পেশা নির্বিশেষে সর্বস্তরের হাজার হাজার মানুষ বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান।

নেচে-গেয়ে, ড্রাম বাজিয়ে, ফুল ছিটিয়ে, গগণবিদারি স্লোগান দিয়ে তাঁরা ছোট জাতীয় পতাকা, প্ল্যাকার্ড, ব্যানার এবং প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিসহ ফেস্টুন নিয়ে গণভবনে আসার পথে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাসভবন গণভবনে পৌঁছানোর পর তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক, ক্রিকেটারসহ গুণীজনরা।

প্রধানমন্ত্রী গণভবনের মূল ভবনের ফটকে পৌঁছালে তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক, কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী, রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী রিজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, জাতীয় দলের ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও তাসকিন আহমেদ, এভারেস্টজয়ী মুসা ইব্রাহিম, নিশাত মজুমদার প্রমুখ।

প্রধানমন্ত্রী ফটকে পা রাখতেই রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা সুর তোলেন- ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্যসুন্দর’। এ সময় উপস্থিত অন্যরা তাঁর সঙ্গে খালি গলায় গেয়ে ওঠেন, ‘মহিমা তব উদ্ভাসিত মহাগগণমাঝে/ বিশ্বজগৎ মণিভূষণ বেষ্টিত চরণে’। এ অভ্যর্থনা গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ অর্জন জনগণের, জনগণের প্রাপ্য এ পুরস্কার। দুটি পুরস্কারই পুরো জাতির ও দেশের জন্য সম্মানের।’

এরপর প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত সবার সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক অসীম কুমার উকিল প্রমুখ।

এর আগে, বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট আজ দুপুর ১টা ৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন বলে জানায় বার্তা সংস্থা বাসস।

বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, শিশু ও নারীবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল মতিন খসরু, হাবিবুর রহমান সিরাজ, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা এ সময় বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।

লন্ডন থেকে ঢাকায় আসার পথে প্রধানমন্ত্রী সিলেটে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক ঘণ্টা যাত্রাবিরতি করেন।

সিলেট জেলা ও নগর আওয়ামী লীগের নেতারা বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানান।

তাঁদের মধ্যে ছিলেন সংসদ সদস্য ইমরান আহমেদ, সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লুৎফর রহমান, সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, সাধারণ সম্পাদক আসাদউদ্দিন আহমেদ এবং সিলেট সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আশফাক আহমেদ।

এর আগে নিউইয়র্ক থেকে দেশে আসার পথে প্রধানমন্ত্রী লন্ডনে একদিনের যাত্রাবিরতি করেন।

নিউইয়র্কে অবস্থানকালে শেখ হাসিনা গত ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭০তম অধিবেশনের সাধারণ বিতর্কে তাঁর দেশের বিবৃতি পাঠ করেন।

প্রধানমন্ত্রী গত ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির (ইউনেপ) নির্বাহী পরিচালক আচিম স্টেইনারের কাছ থেকে মর্যাদাপূর্ণ ‘চ্যাম্পিয়নস অব দি আর্থ অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ করেছেন।

শেখ হাসিনা গত ২৬ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) মহাসচিব হুলিন ঝাওয়ের কাছ থেকে ‘আইসিটি টেকসই উন্নয়ন পুরস্কার’ গ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী ২৮ সেপ্টেম্বর অন্যান্য রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের সঙ্গে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭০তম অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেদিন তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এবং রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের সম্মানে আয়োজিত ভোজসভায় যোগ দেন।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাধারণ বিতর্কে যোগদান ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী বেশকিছু অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে, এবং নেদারল্যান্ডসের রানি ম্যাক্সিমাসহ বেশ কিছু রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউইয়র্কে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী গত ২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭০তম অধিবেশনে যোগদানের জন্য নিউইয়র্কে পৌঁছান।