এটা নির্বাচন নয়, ত্রাসের রাজত্ব : মওদুদ আহমদ
নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা, হামলা ও গ্রেপ্তারের কথা উল্লেখ করে নোয়াখালী-৫ আসনের বিএনপির প্রার্থী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, এটা কোনো নির্বাচন নয়, ত্রাসের রাজত্ব চলছে। দেশবাসী ভোট দিতে না পারলে এ সরকার কলঙ্কিত হবে, গণতন্ত্রকে হত্যা করা হবে। এটা কোনো নির্বাচন নয়, এটা ত্রাসের রাজত্ব ও সরকারি দলের দুর্বৃত্তায়ন চলছে।
আজ বুধবার সকালে ও বিকেলে নিজ নির্বাচনী এলাকায় দুদফা গণসংযোগ ও নির্বাচনী সভা করতে গেলে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার অভিযোগ এনে বিকেলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মানিকপুর গ্রামে তাঁর নিজ বাড়িতে তাৎক্ষণিক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।
মওদুদ আহমদ বলেন, এভাবে বাধা, হামলা-মামলা ও গ্রেপ্তার যদি সারা বাংলাদেশে হয় তাহলে নির্বাচনের ওপর মানুষের বিশ্বাস একেবারেই চলে যাবে। আর কোনো আস্থা থাকবে না। ‘তবে আমি এখনো আশাবাদী, ভোটাররা যদি নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্রে গিয়ে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে, তাহলে আমার ন্যায় সারা দেশে ধানের শীষের প্রার্থীরা বিপুল ভোটে জয় লাভ করবে।’
বিএনপির প্রার্থী বলেন, ‘যেখানে প্রার্থীর নিরাপত্তা নাই, সেখানে ভোটারের নিরাপত্তা থাকতে পারে না। তবে যতই নির্যাতন করা হোক, শেষ মিনিট পর্যন্ত নির্বাচনে থাকব।’
মওদুদ বলেন, দেশের মানুষ জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে দেখুক দলীয় সরকারের অধীনে কেমন নির্বাচন হয়। এটা একটা সুযোগ ছিল আওয়ামী লীগের প্রমাণ করার জন্য যে, দলীয় সরকারের অধীনেও সুষ্ঠু নির্বাচন করা যায়।
প্রশাসন ও সরকারি দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আমার দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৩১টি মামলা দেওয়া হয়েছে। এ সব মামলায় ৯৬৫ জনকে এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে এক হাজার ৬৪৯ জনকে।’
এই বিএনপিনেতা বলেন, ১০ ডিসেম্বরের পর থেকে হামলায় আজ পর্যন্ত ৭৬৬ জনকে আহত করা হয়েছে। নির্বাচনে যারা মূল কাজ করার কথা তাদের মধ্যে ৭৮ জনকে জেলে দেওয়া হয়েছে। তিনি সাংবাদিকদের কাছে প্রশ্ন রাখেন, ‘এটা কি নির্বাচনী পরিবেশ?’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জাহাঙ্গির আলম, পৌরসভা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মমিনুল হক ও নোয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান মো. নোমান প্রমুখ।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে মওদুদ আহমদের করা অভিযোগ অস্বীকার করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে তাৎক্ষণিক এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদল বলেন, ‘ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের সব অভিযোগ ভিত্তিহীন, অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত। নির্বাচনে সাধারণ ভোটারদের সাড়া না পেয়ে তিনি আজ অবান্তর বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি এখন অনেকটা দিশেহারা হয়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এবং আমাদের নেতা ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছেন।’