হাজারীবাগে মাছ-মুরগির ভেজাল খাদ্য জব্দ

Looks like you've blocked notifications!
রোববার রাজধানীর হাজারীবাগে চামড়া প্রক্রিয়াজাত কারখানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল ক্রোমিয়াম মিশ্রিত গুঁড়া জব্দ করা হয়, মাছ ও মুরগির খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় এই গুঁড়া। ছবি : এনটিভি

রাজধানীর হাজারীবাগে অভিযান চালিয়ে মানবদেহের জন্য চরম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকা চামড়ার উচ্ছিষ্ট থেকে তৈরি ভেজাল পোলট্রিফিড ও মাছের খাবারের উপাদান জব্দ করেছেন র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা জানান, এসব খাবার যেসব মুরগি ও মাছকে খাওয়ানো হয় পরীক্ষায় সেসব মাছ ও মুরগির শরীরে ক্রোমিয়ামের পরিমাণ পাওয়া গেছে স্বাভাবিক মাত্রার চেয়েও কয়েকশ গুণ বেশি। এমন মাছ ও মুরগি খেলে ক্যান্সার বাসা বাঁধতে পারে মানবদেহে।

পরিবেশ দূষণের দায়ে হাজারীবাগ থেকে চামড়া শিল্প সরানো হয়েছে ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুরে। কিন্তু তার বিষবাষ্প এখনো রয়ে গেছে হাজারীবাগ এলাকায়। চামড়াজাত পণ্য তৈরির আড়ালে চামড়ার উচ্ছিষ্ট পুড়িয়ে বানানো গুঁড়া ভাঙিয়ে প্রস্তুত হচ্ছে মাছ ও মুরগির খাবার। চামড়া পুড়িয়ে তৈরি করা মাছ মুরগির ভেজাল খাবার থরে থরে সাজিয়ে ও গুদামজাত করে রাখা হয়েছে। যাকে স্থানীয়রা শুঁটকি বলে জানে। শুধু একটি কারখানাতেই পাওয়া যায় চার হাজার কেজি ক্রোমিয়াম মিশ্রিত গুঁড়া। র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত কারখানার ভেতরে পায় মাত্র দুজন শ্রমিককে। মালিক লাপাত্তা।

র‍্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সরওয়ার আলম বলেন, চামড়া শিল্প বা ট্যানারির যে বর্জ্য, যেগুলো অত্যন্ত উচ্চমাত্রায় হেভি মেটাল বা বিশেষ করে ক্রোমিয়ামযুক্ত যে বর্জ্য, এসব বর্জ্য দিয়ে পোলট্রি ফিড অর্থাৎ হাঁস-মুরগির খাবার ও মাছের খাবার তৈরি করা হচ্ছে। আইন অনুযায়ী এটি অপরাধ।

আর এসবের ভেতরে স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে কয়েশগুণ বেশি ক্রোমিয়াম থাকে বলে গবেষণায় ধরা পড়েছে। যা মাছ ও মাংস থেকে পরে মানবদেহে ছড়িয়ে পড়ে বলে জানালেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা।

সাভার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ফজলে রাব্বী মণ্ডল বলেন, ছয়টি স্যাম্পলের মধ্যেই আমরা স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে কয়েকশ গুণ বেশি ক্রোমিয়াম পেয়েছি। এই ক্রোমিয়ামের জায়গাটা হচ্ছে মস্তিষ্কে। মস্তিষ্ক তো পরিষ্কার করা যায় না, অল্প পরিমাণ হলেও ওটা থেকেই যায়। সেই থাকাটাই আমাদের জন্য ভয়াবহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।

লালবাগ থানা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শাহীনুর ইসলাম বলেন, ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে, আর এটা যেহেতু কেমিকেল অন্য কোনো অ্যান্টিবায়োটিক বা এন্টিভাইরাল কোনো ক্যামিকেল দিয়ে প্রতিরোধ করতে পারবেন না। এটাকে প্রিভেন্ট করাও সম্ভব না।   

প্রাণঘাতী এসব ভয়ংকর উপাদান যাতে কোনো অবস্থাতেই উৎপাদন হতে না পারে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ থাকলেও এর উৎপাদন ও বাজারজাত থেমে নেই।