জীবিত নবজাতক হয়ে গেল মৃত, দুই পরিচালক আটক
ময়মনসিংহ সদরে চিকিৎসকের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগে এক ক্লিনিকের দুই পরিচালককে আটক করেছে পুলিশ।
আজ সোমবার শহরের কৃষ্টপুর এলাকা থেকে পরশ প্রাইভেট হাসপাতালের পরিচালক রেজাউল কবীর ও শফিকুর রহমান জনিকে আটক করা হয়।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) পলাশ জানান, গতকাল রোববার রাতে সদর উপজেলার কল্যাণপুর এলাকার হারুনুর রশিদ প্রসব যন্ত্রণায় ভুগতে থাকা তাঁর স্ত্রী জান্নাত বেগমকে শহরের কৃষ্টপুর এলাকায় পরশ হাসপাতালে ভর্তি করেন। রাত সাড়ে ১১টার পর অস্ত্রোপচারের (সিজার) মাধ্যমে জান্নাতের একটি ছেলে সন্তান হয় বলে দেখানো হয় স্বজনদের। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই মৃত সন্তান হয়েছে বলে উল্লেখ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শিশুর বাবা দেখতে পান সন্তানের মুখ ও শরীর রক্তাক্ত এবং পিঠের চামড়া নেই।
এসআই পলাশ বলেন, সন্তানের মৃত্যুর বিষয়টি জানাতে আজ সকাল ৯টায় থানায় আসেন হারুনুর রশিদ। তিনি একটি অভিযোগ দেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে পরে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে হাসপাতাল পরিদর্শন করে দুই পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসি।
হাসপাতালে গিয়ে কোনো চিকিৎসককে পাওয়া যায়নি বলে জানায় পুলিশ। কর্তব্যরত নার্স অলিমা প্রিয়া জানান, ওই সিজারটি করেন ডাক্তার শিশির। এ ছাড়া ডা. তানভীর রোগীর চেতনানাশের দায়িত্বে ছিলেন।
নবজাতকের বাবা হারুনুর রশিদ বলেন, ‘আমি সাড়ে ১১টার দিকে আমার বউরে ক্লিনিকে আনছি। ক্লিনিকে আনার পরে ১২টার আগে দিয়া ভর্তি করছে, ভর্তি করার পর অপারেশন করছে। ওই যে পরশ ক্লিনিকে। পরশ ক্লিনিকে ভর্তি করছে। ভর্তি করার কিছুক্ষণ পরে ডাক্তার অপারেশন করছে, পরে বাবু সুস্থ আছিল। কিছুক্ষণ পরে কয় যে, মরা। মরার পরে তেনা দিয়া পেঁচাইয়া আমার ভাইয়ের কাছে দিয়া দিছে।’
‘পরে আমি কই বাবুটারে আমগোর বাড়িতে নেও, দেখমু। পরে দেখার পরে দেখি যে, চাইর দিক দিয়া বাবুর কাটা। লুঙ্গি দিয়া পেঁচাইয়া দিয়া দিছে। ডাক্তারের গাফিলতিতে মারা গেছে। আমরা ডাক্তারের বিচার চাই। বাবুটারে কাইটালাইছে।’ বলে আহাজারি করতে থাকেন হারুন।
এদিকে আটক পরিচালক শফিকুর রহমান জনি দাবি করে বলেন, চিকিৎসকরা সিজার করে মৃত বাচ্চাই বের করে আনেন।