দুর্যোগে ক্ষতি কমাতে জোর প্রধানমন্ত্রীর

Looks like you've blocked notifications!
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে দুর্যোগ মোকাবিলায় সমন্বয় কার্যক্রম জোরদারকরণ-সংক্রান্ত রিজিওনাল কনসালটেটিভ গ্রুপের চতুর্থ সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : এনটিভি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা দুর্যোগ প্রতিরোধ করতে হয়তো পারব না, কিন্তু আমাদের দূরদর্শী কাজের মাধ্যমে দুর্যোগে যে ক্ষতিসাধন হয়, সেই ক্ষতির পরিমাণ হ্রাস করতে আমরা পারি। বাংলাদেশে আমরা ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস ও ঝুঁকি প্রশমনের প্রতিই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব আরোপ করেছি।’

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে দুর্যোগ মোকাবিলায় সমন্বয় কার্যক্রম জোরদারকরণ-সংক্রান্ত রিজিওনাল কনসালটেটিভ গ্রুপের (আরসিজি) দুদিনব্যাপী চতুর্থ সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি প্রশমনে প্রতিবেশীসহ বিভিন্ন দেশের সহযোগিতা কামনা করেন।

শেখ হাসিনা তাঁর লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় বৃহদাকার মানবিক সংকটের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। তাই আমাদের এ অঞ্চলে মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে অসামরিক-সামরিক সমন্বয়ের প্রাসঙ্গিকতা বৃদ্ধি পেয়েছে। দুর্যোগে সাড়াদানের ক্ষেত্রে অসামরিক এবং সামরিক বাহিনীর সদস্যরা যৌথভাবে বিভিন্ন কার্যক্রমে, বিশেষ করে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানে, মৃতদেহ ও জঞ্জাল ব্যবস্থাপনা বা সড়ক, সেতু মেরামত করতে কাজ করে যাচ্ছেন।’

‘আমাদের সার্বিক জাতীয় কৌশলের অংশ হিসেবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা ছাড়াও বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স, বাংলাদেশ পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), আনসার-ভিডিপি, বাংলাদেশ স্কাউটস, বিএনসিসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে ২০১৭ সালে এই গ্রুপের সভাপতি মনোনয়ন করায় আমি রিজিওনাল কনসালটেটিভ গ্রুপের সব সদস্য দেশকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে ‘রূপকল্প ২০২১ এবং ২০৪১’-এর উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা জাতীয় স্থিতিস্থাপকতার দিকে অগ্রসর হচ্ছি। মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের জন্য আমাদের জাতীয় কাঠামো অসামরিক-সামরিক সমন্বয়বান্ধব। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন-২০১২-এর আওতায় একটি একীভূত সমন্বয় কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, প্রায় ১১ লাখ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ, অবকাঠামো নির্মাণ, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় অসামরিক-সামরিক সমন্বয়ে পরিচালিত কার্যক্রম, মানবিক সহায়তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে টেকসই উন্নয়নের একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।

‘সম্প্রতি আমরা ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ প্রণয়ন করেছি। এ পরিকল্পনার আয়তায় আগামী একশ বছরে টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। নেদারল্যান্ডস সরকার এই চুক্তিতে আমাদের সঙ্গে আবদ্ধ আছে। আমরা তাদের সঙ্গে আমাদের ডেল্টা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করব। এটি বাস্তবায়িত হলে জলবায়ু পরিবর্তন ঝুঁকি মোকাবিলাসহ দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস পাবে এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বিগত কয়েক বছরে ভূমিকম্পসহ অন্যান্য দুর্যোগ অনুসন্ধান ও উদ্ধারকাজ পরিচালনার জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ২৩৬ কোটি টাকার সরঞ্জাম ক্রয় করে আর্মড ফোর্সেস ডিভিশন ও অন্যান্য সংস্থাকে হস্তান্তর করেছে বলেও উল্লেখ করেন।