পেট্রলবোমায় ভ্যানচালককে হত্যার দায়ে ৫ জনের যাবজ্জীবন
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ২০১৫ সালে পেট্রলবোমা হামলা করে কাভার্ডভ্যানের চালক শিপন হোসেনকে (৩০) হত্যার দায়ে পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক অনুপ কুমার এ আদেশ দিয়েছেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—শিবগঞ্জের বিয়েনবাজার গ্রামের মহসিন রেজার ছেলে ফেরদৌস আহমেদ, কানসাট শিকারপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে মামুন আলী ওরফে আপেল, রসুলপুরের মেরাজ উদ্দিনের ছেলে আবু বাক্কার সিদ্দিক, শিয়ালমারা গ্রামের সাদিকুল ইসলামের ছেলে আবু সাঈদ ওরফে সায়েম এবং কানসাট গোপালনগর মোড়ের হযরত আলীর ছেলে মো. তোফায়েল।
দণ্ডপ্রাপ্তরা সবাই বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী। তাঁদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরো এক বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আলাদা আরেকটি ধারায় তাঁদের ১০ বছর করে কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এই অর্থ অনাদায়েও তাঁদের আরো এক বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মামলায় অভিযোগভুক্ত আসামি ছিলেন ৫৪ জন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অন্য ৪৯ জন বেকসুর খালাস পেয়েছেন।
রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু জানান, দেশব্যাপী হরতাল-অবরোধ চলাকালে ২০১৫ সালের ৩ মার্চ ভোররাতে শিবগঞ্জ উপজেলার কয়লাবাড়ী বাজারে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা সোনামসজিদ স্থলবন্দরগামী একটি কাভার্ডভ্যানে পেট্রলবোমা ছুড়ে মারেন। এতে গাড়িটির চালক ভোলা জেলার শিপন হোসেন (৩০) দগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির ভাই আবদুল মান্নান অজ্ঞাতদের আসামি করে সেদিনই শিবগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটির দ্রুত বিচার শেষ করার জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের আদালত থেকে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
এরই মধ্যে তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল ৫৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। এ মামলায় মোট ২৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় একজন ছাড়া সব আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালতে রায় ঘোষণার পর সাজাপ্রাপ্তদের রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলার আইনজীবী ছিলেন রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু। আসামিদের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী মিজানুর রহমান।