প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ জনগণের সঙ্গে উপহাস : রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে যারা তাঁকে ভোট দিয়েছেন এবং যারা দেননি তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। দেশের আসল মালিক জনগণের প্রকৃত ভোট দেওয়ার অধিকার ও সাংবিধানিক দাবিকে উপহাস করার নতুন মাত্রা যোগ করলেন।’
জনগণ প্রধানমন্ত্রীর ভাষণকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখান করেছেন বলে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বরের ভোটে জনগণ বিজয়ী হয়নি কিংবা আওয়ামী লীগও বিজয়ী হয়নি, বিজয়ী হয়েছে জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী।
গতকাল রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। সেখানে তিনি বিভেদ ভুলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও অসাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক দেন।
শেখ হাসিনা সংখ্যায় কম হলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী বিরোধী দলকে সংসদে যোগ দিয়ে আলোচনা, সমালোচনায় অংশ নিতে তাদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বিরোধী দলের সব প্রস্তাবের যথার্থ মূল্য দেওয়ার ব্যাপারেও আশ্বস্ত করেন।
‘খালেদা জিয়া আছেন স্যাঁতসেতে, ধুলাবালির কক্ষে’
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে কারাগারে অস্বাস্থ্যকর, স্যাঁতসেতে ও ধুলাবালিতে আকীর্ণ একটি কক্ষে বাস করতে বাধ্য করা হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘সরকার তাঁর সঙ্গে মুক্তিপণ আদায়ের মতো আচরণ করছে।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, কারাগারে খালেদা জিয়ার বাস করার জায়গাটির কোনো পরিবর্তন হয়নি। বারবার এ বিষয়ে কারাকর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
‘খালেদা জিয়ার সঙ্গে যে আচরণ করা হচ্ছে সেটি অমানবিক ও দুঃখজনক। সমাদৃত ও বিপুল জনপ্রিয় নেত্রীকে পরিকল্পিতভাবেই মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে আটকিয়ে রাখা হয়েছে। খালেদা জিয়ার জামিনকে বিলম্বিত করা হচ্ছে নানা কায়দা-কৌশল করে।’
অসুস্থতার কথা বিবেচনা না করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে ঘনঘন আদালতে হাজির হতে বাধ্য করা হচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, ‘তবুও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে অবিচল খালেদা জিয়াকে কোনোভাবেই টলাতে পারেনি সরকার।’
‘বিএনপিতে বিভেদ নেই’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব গত বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, বিএনপি ভেঙে যাবে। এরপর উপজেলা পরিবষদ নির্বাচন বয়কট করার প্রেক্ষাপটে গতকাল শুক্রবার তিনি বলেছেন, বিএনপির পরিণতি মুসলিম লীগের দিকে যাচ্ছে কি না সেটা ভেবে দেখতে হবে।
রুহুল কবির রিজভী তাঁর লিখিত বক্তব্যে এসব কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারেনি। পুলিশের ওপর নির্ভরশীল হয়ে রাতের আঁধারে জাল ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স পূর্ণ করতে হয়েছে। পুলিশি ক্ষমতা যখন থাকবে না তখন তো আওয়ামী লীগের বাতি জ্বালানোর লোকও খুঁজে পাওয়া যাবে না।’
বিএনপির মধ্যে কোনো বিভেদ নেই উল্লেখ করে দলের এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দলের তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত সব নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ। এই ঐক্যে ফাটল ধরাতে পারেননি বলেই ওবায়দুল সাহেবের বুকে বড় জ্বালা। এজন্য তিনি বিএনপির ছিদ্র খুঁজতে আর্তচিৎকার করছেন।’