সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ

গণফোরামের দুই সদস্য ‘ইতিবাচক’, কিন্তু দলের না

Looks like you've blocked notifications!
সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও মোকাব্বির খান। ছবি : সংগৃহীত

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গণফোরামের নির্বাচিত দুই সাংসদ শপথ নেওয়ার ব্যাপারে তাঁদের দল ইতিবাচক সংকেত দেবে বলে প্রত্যাশা করলেও দলটির সিনিয়র নেতারা সংসদে যোগ না দেওয়ার ব্যাপারে আগের সিদ্ধান্তে অটল আছেন।

বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে গণফোরামের দুই সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও মোকাব্বির খান জানিয়েছেন, তাঁরা মনে করেন, জনগণ তাদের পক্ষে যে রায় দিয়েছে সেই রায়ের প্রতি সম্মান দেখিয়ে দলটি সংসদে যোগ দেওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবে।

সুলতান মোহাম্মদ মনসুর মৌলভীবাজার-২ ও মোকাব্বির খান সিলেট-২ থেকে নির্বাচিত হন।

এদিকে গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী জানিয়েছেন, গণফোরামের নির্বাচিত এমপিদের জাতীয় সংসদে না পাঠানোর আগের সিদ্ধান্তে তাঁদের দল এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এখনো অটল। তিনি আরো জানান, এ বিষয়ে তাদের দলে আলোচনা হতে পারে এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ড. কামাল হোসেন দেশে আসার পর নেওয়া হবে।

সুব্রত জানান, ড. কামাল হোসেনের সোমবার দেশে ফেরার কথা ছিল, তবে অনিবার্য কারণবশত এই তারিখ পরিবর্তন করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘স্যার (কামাল) দু-একদিন পর দেশে ফিরবেন।’

সুব্রত আরো বলেন, ‘সুলতান মনসুর ও মোকাব্বির খান জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য। জোট নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান এবং সংসদে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরও তারা কীভাবে সংসদে যোগ দেওয়ার কথা বলেন তা জিজ্ঞাসা করা হবে।’ 

গণফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম পথিক জানান, সংসদে যোগ দেওয়ার বিষয়ে তাঁদের দল কোনো ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেয়নি।

সুলতান মনসুর দাবি করেন, গণফোরামের দুই সাংসদের সংসদে যোগ দেওয়ার বিষয়ে তাদের দলের নেতারা ইতিবাচক। তিনি বলেন,  ‘আমাদের দলের নেতা কামাল হোসেন এর আগেই বলেছেন সংসদে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে আমাদের দল ইতিবাচকভাবে চিন্তা করছে।’

মনসুর বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, জনগণের পক্ষে ভূমিকা রাখতে শেষ পর্যন্ত দল আমাদের সংসদে পাঠাবে।’ তিনি বলেন, ‘প্রতিকূল পরিবেশেও সাহসিকতার সঙ্গে জনগণ আমাদের নির্বাচিত করেছে। তাদের পক্ষে কাজ করা আমাদের কর্তব্য।’

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের দল শপথ নেওয়ার অনুমতি না দিলে কি করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে মনসুর বলেন, ‘নেতিবাচক কোনো চিন্তা করতে চাই না। আমি বিশ্বাস করি এ বিষয়ে দল ইতিবাচক সিদ্ধান্তই নেবে।’

এদিকে গণফোরামের আরেক নেতা মোকাব্বির খান জানান, তাঁদের দল শপথের বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবে বলে তিনি প্রত্যাশা করছেন। তবে দল যে সিদ্ধান্তই নেবে তা তিনি মেনে নেবেন বলে জানান।

মোকাব্বির খান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সংসদে যাওয়ার বিষয়ে আমাদের দলের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে সেটি চুড়ান্ত নয়। আমরা বিজয়ী হওয়ার পর আমাদের দলেল স্ট্যান্ডিং কমিটি, বর্ধিত সভা সবকিছুতে সংসদে যাওয়ার বিষয়ে সবাই ইতিবাচক মত দিয়েছেন। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবেন আমাদের দলীয় প্রধান ড. কামাল হোসেন দেশে আসার পর। তিনি যেটি সিদ্ধান্ত দিবেন সেটিই হবে চূড়ান্ত।’

ব্যক্তিগত ভাবে সংসদে যাওয়ার বিষয়ে কী মনে করেন জানতে চাইলে মোকাব্বির খান বলেন, ‘আমি মনে করি সংসদে যাওয়া উচিত। আমার নির্বাচনী আসনের জনগণও চায় আমি যেন শপথ গ্রহণ করে সংসদে যাই। কারণ আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। তবে আমি যেহেতু গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য সেহেতু দল যে সিদ্ধান্ত দিবে সেটিই আমি মেনে নেব।’

বিএনপি, গণফোরাম এবং আরো কয়েকটি দল মিলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়। নির্বাচনে বিএনপি ছয়টি এবং গণফোরাম দুটি আসনে জয় পায়।

‘ব্যাপক ভোট ডাকাতির’ অভিযোগ এনে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট ভোটের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে এবং নতুন নির্বাচনের দাবি জানায়।

আগামী ৩০ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হবে।