‘একটু ভাল খাবারের জন্যে জেলে অনেক কিছু করতে হয়েছে’

Looks like you've blocked notifications!
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন জাহালম। ছবি : এনটিভি

‘একটু ভাল খাবারের জন্যে ওয়ার্ডের চল্লিশজন আসামির খাবার সরবরাহ ও তাদের কাপড় ধোয়া থেকে শুরু করে অনেক কিছু করতে হয়েছে আমাকে।’

কারাগারে থাকার অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে এভাবেই বলেন জাহালম।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় তিন বছর ধরে কারাগারে থাকা ভুল আসামি জাহালম জানালেন জেলখানার অবর্ণনীয় কষ্টের দিনগুলোর কথা।

হাইকোর্টের আদেশের পর রোববার রাতে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্ত হলে তাঁর ভাই শাহনুরকে সঙ্গে নিয়ে রাতেই গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ধুবুরিয়ায় পৌঁছান জাহালম।

জাহালম আজ সোমবার সকালে এনটিভিকে বলেন, ‘সেখানে আমার খুবই কষ্টে দিন কাটাতে হয়েছে। কারণ আমার পরিবারের অবস্থা ভাল না। আমি কারাগারে সেবকের কাজ করতাম।’

জাহালম বলেন, ‘একটু ভাল খাবারের জন্যে ওয়ার্ডের চল্লিশ জন আসামির খাবার সরবরাহ ও তাদের লুঙ্গি, চাদর ধোয়া, পানি আনা থেকে শুরু করে অনেক কিছু করতে হয়েছে আমাকে।’

কারাগারে তিন বছরের অবর্ণনীয় কষ্টের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বিনা অপরাধে জেল খাটছি এটা ভেবেই আমার বেশি কষ্ট হয়েছে। আমি যদি অপরাধী হতাম যদি এ ব্যাপারে কিছু জানতাম, তাহলে এতো কষ্ট হতো না।’

এ সময় নিজের এই অবস্থার জন্যে ক্ষতিপূরণ ও দুদকের বিচার দাবি করেন জাহালম।

সম্প্রতি দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় ‘৩৩ মামলায় ভুল আসামি জেলে’ ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, আবু সালেকের (মূল অপরাধী) বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির ৩৩টি মামলা হয়েছে। কিন্তু আবু সালেকের বদলে জেল খাটছেন জাহালম। তিনি পেশায় পাটকল শ্রমিক।

ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাস গুপ্ত। প্রতিবেদনটি আদালতে উপস্থাপনের পর স্বত:প্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট।

সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগে আবু সালেক নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা করে দুদক। কিন্তু দুদকের ভুলে সালেকের বদলে তিন বছর কারাগারে কাটাতে হয়েছে টাঙ্গাইলের জাহালমকে।