‘রক্তের টানে বুঝছি, এইডাই আমার ভাই অইব’

Looks like you've blocked notifications!
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গের সামনে হাসিনা বেগমের আহাজারি। ছবি : মোহাম্মদ ইব্রাহিম

‘আমার ভাই পুইড়া গেছে, গামছা দেইখা আন্দাজ করছি। চেনা যায় না, তবু এইডাই আমার ভাই। এ ছাড়া আর কাউরে আমার ভাইয়ের মতো লাগে নাই। সব জায়গায় তসনস করছি, কোথাও আর পাই নাই। রক্তের টানে বুঝছি, এইডাই আমার ভাই অইব।’

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে ভাই আবু ইছহাকের লাশ শনাক্ত করতে এসেছেন হাসিনা বেগম। মাটিতে বসে কাঁদতে কাঁদতে হাসিনা এনটিভি অনলাইনকে এসব কথা বলেন।

হাসিনা বেগম বলেন, ‘একবার একটু দেখছি আমার কলিজার ভাইকে। ভিড় আর ভিড়, পুলিশে বেশি দেখতে দেই নাই। সব পুইড়া গেছে, কিছুই চিনতে পারছি না। হুদু ভাইয়ের ব্যবহার করা গামছা দেইখা বুঝছি এইডাই আমার ভাই। আল্লাগো, আমার ভাইকে কেন শাস্তি দিলা তুমি। আমারেও মাইরা ফালাও!’

ভ্যানচালক আবু ইছহাক (৩৫) পরিবার নিয়ে থাকেন কামরাঙ্গীরচর। তাঁর দুই ছেলে ইমরান (৬) ও আলিফ (৩)। চকবাজারের বিভিন্ন কারখানার মালামাল টানেন ইছহাক। গতকাল রাতে কাজ শেষে বাসায় যাওয়ার আগেই আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছেন তিনি। জানাচ্ছিলেন হাসিনার পাশে বসে থাকা আবু ইছহাকের স্ত্রী পপি আক্তার।

পপি আক্তার বলছিলেন, তাঁর স্বামী রাত ১২টার আগেই বাসায় যান প্রতিদিন। গতকাল রাতেও বাসায় যাচ্ছিলেন। রাস্তায় জ্যামে বসেছিলেন। ওই সময় আগুন লাগে চকবাজারে। তাঁর স্বামীর সঙ্গে যারা কাজ করে তাদের কাছ থেকে আজ সকালে এসব শুনেছেন।

পপি আরো বলেন, তাঁর দুই ছেলে। তাদের বাসায় রেখে এসেছেন। বড় ছেলে বারবার শোকে অচেতন হয়ে পড়ছে। তাঁর এখন কী হবে জানেন না। লাশ কখন পাবেন জানেন না।

পপির মুঠোফোনে কল আসছিল। যতবার কল আসছিল কেঁদে কেঁদে সবাইকে বলছিলেন, ‘আমিও মইরা যামু। আর বাইচ্চা থাইক্যা কী করমু? আমার স্বামী পুইড়া গেছে। আমি মরতে চাই।’