ভৈরবে তিন মুক্তিযোদ্ধা সংগীত শিল্পীকে সংবর্ধনা

Looks like you've blocked notifications!
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় অতিথিদের কাছ থেকে ক্রেস্ট নিচ্ছেন বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. খসরু। ছবি : এনটিভি

কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় তিন বীর মুক্তিযোদ্ধা গুণী শিল্পীকে সংবর্ধনা দিয়েছে ভৈরব শিল্পকলা পরিষদ। শুক্রবার রাতে ভৈরব উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

সংবর্ধনা পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. খসরু, বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের বিশিষ্ট যন্ত্র সংগীত (তবলা) শিল্পী, বীর মুক্তিযোদ্ধা দেবু চৌধুরী এবং বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের বিশিষ্ট যন্ত্র সংগীত (বাঁশি) শিল্পী, বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী আব্দুল হাকিম।

ভৈরব শিল্পকলা পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল বাসেতের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।

বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, পাকিস্তানি স্বৈরশাসকদের অত্যাচারে পিষ্ট হওয়া আমরা প্রথমে ‘না’ বলি যখন উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে আমাদের ওপর চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল। আর সেই ‘না’কে আমরা আমাদের বিজয় হিসেবে ছিনিয়ে নিই রক্ত দিয়ে। আমাদের রক্তে কেনা মায়ের ভাষা আজ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। একুশে ফেব্রুয়ারি আজ কেবল বাঙালির নয়, সমস্ত ভাষাভাষীদের ভাষা দিবস। দ্বিতীয়বার আমরা ওই শাসকদের ‘না’ বলি ১৯৭১ সালে। সেই ‘না’কে বিজয়ে পরিণত করতে আমরা ত্রিশ লাখ শহীদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছি। অসংখ্য মা-বোনের সম্ভ্রম বিলিয়ে দিয়েছি। রক্ত আর সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা কিনি আমাদের স্বাধীনতা।

বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, তাই যে জাতি রক্ত দিয়ে মায়ের ভাষা আর দেশের স্বাধীনতা ক্রয় করে, তাদের উন্নয়ন ও অগ্রগতি হবেই। আজ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, উন্নয়ন আর সমৃদ্ধির দিকে। আর এই অগ্রগতির ধারাকে অব্যাহত রাখতে সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে একযোগে কাজ করতে হবে।

গুণীজনদের এই সংবর্ধনা দেওয়াকেও গুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসেবে উল্লেখ করে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, যে দেশে গুণীর কদর নেই, সে দেশে গুণীর জন্ম হয় না। এই কথাটি অতি পুরোনো হলেও এটিই বাস্তব, এটিই চিরন্তন সত্য।

আজকের সংবর্ধিত গুণী শিল্পীরা প্রত্যেকেই ৭১ রণাঙ্গণের বীর মুক্তিযোদ্ধা-উল্লেখ করে বিচারপতি বলেন, আমি আপনাদের স্যালুট জানাচ্ছি। আপনাদের সেই অসীম সাহসিকতার জন্য আজ আমরা স্বাধীন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ফরিদপুর জেলার জেলা ও দায়রা জজ মো. হেলাল উদ্দিন, কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান, প্যানেল চেয়ারম্যান মির্জা মো. সোলায়মান, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সাবেক উপ-পরিচালক, বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের সুরকার গীতিকার শহীদুজ্জামান স্বপন।

সংগঠনের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি অধ্যাপিকা সাজেদা বাসেতের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ, সংবর্ধিত যন্ত্রশিল্পী দেবু চৌধুরী প্রমুখ। পরে সংগঠনের শিল্পীদের পরিবেশনায় দলীয় সংগীত, নাচ, গান পরিবেশিত হয়।