উত্তরায় শিশুর লাশ উদ্ধার, সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

Looks like you've blocked notifications!
শিশু মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তরায় সড়ক অবরোধ করা হয়। ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরায় এক শিশুর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। বিক্ষোভকারীদের অবরোধের কারণে বিমানবন্দর সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

আজ বুধবার দুপুর ১২টা থেকে রাস্তা অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় স্থানীয়রা। তাদের দাবি পুলিশ ইচ্ছেকৃতভাবেই আসামিকে গ্রেপ্তার করছে না! এমনকি প্রথমে মামলা নিতেও গড়িমসি করার অভিযোগ করে এলাকাবাসী |

স্থানীয় বাসিন্দা ও নিহত শিশুর পরিবারের অভিযোগ, সাত বছরের শিশু রিফাত তার বন্ধুদের সঙ্গে স্থানীয় এক বাড়িতে খেলতে গেলে বাড়িওয়ালা তাদের মারধর করে। মারধরের ফলে শিশু রিফাতের মৃত্যু হয়। এরপর ঘটনা ধামাচাপা দিতে বাড়িওয়ালা বাড়ির পানির ট্যাংকিতে ফেলে দেয় রিফাতের মরদেহ। উত্তরার আজমপুরে এ ঘটনা ঘটে।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে। এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে মরদেহ এখনো দাফন করেনি পরিবার। অন্যদিকে অভিযুক্ত বাড়িওয়ালা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ মামলা নিতেও কালক্ষেপণ করেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে দক্ষিণখান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুজন জানান, আজমপুরের বাসিন্দা আবদুর রশিদের সাত বছরের ছেলে রিফাতকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।  তাদেরই প্রতিবেশী অজিত কুমার বসাকের বাড়ির ভেতরে একটি নর্দমায় রিফাতের লাশ পাওয়া যায়। এরপর রিফাতের বাবা দক্ষিণখান থানায় যান অজিত কুমারের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য। কিন্তু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তপন চন্দ্র উপযুক্ত প্রমাণ না থাকার কারণ দেখিয়ে মামলা নেননি।

এ ব্যাপারে উত্তরা মডেল থানার ওসি নূরে আলম সিদ্দিকী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘দক্ষিণ খান এলাকায় সকালে একটি শিশু দুর্ঘটনায় মারা যায়। এরপর উত্তেজিত এলাকাবাসী সড়কে ব্যারিকেড দিয়েছে।’

ওসি নূরে আলম আরো বলেন, ‘ঘটনাটা দক্ষিণখান থানা এলাকার। আমরা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করতেছি, আমাদের সিনিয়র অফিসাররাও আছেন এখানে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি তাদের বুঝিয়ে শিশুর মরদেহ দাফন করার ও সড়ক অবরোধ তুলে দেওয়ার।’

এ ঘটনার অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার ও আগে মামলা না নেওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে ওসি নূরে আলম বলেন, ‘ঘটনা অতন্ত দুঃখ জনক, মর্মান্তিক,পুলিশ অভিযুক্তকে আইনের আওতায় আনবে। আর ঘটনা যেহেতু দক্ষিণখান এলাকায় ঘটছে সে থানার ওসি ভালো বলতে পারবেন মামলার বিষয়ে। আমি যত দূর জানি কাল রাতে মামলা হয়েছে।’

এদিকে নিহত রিফাতের স্বজন শাহীন ইসলাম কুদরত এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘রিফাত গতকাল বন্ধুদের সাথে খেলতে গেলে অভিযুক্ত অজিত কুমার তাদের মারধর করে। এ সময় রিফাত মারা গেলে তার মরদেহ পানির টাংকিতে ফেলে দেয়।’

শাহীন আরো বলেন, ‘গতকাল আমরা থানায় মামলা করতে গেলে দক্ষিণখান থানার ওসি মামলা নেননি। পরে আমরা লাশ নিয়ে বিক্ষোভ করলে রাত ১২ টার দিকে মামলা নেয়।’ প্রথমে অভিযুক্তকে আটক করা হলেও পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন।

শাহীন বলেন, ‘কাল রাতে মামলা নিলেও এখনো আসামিকে গ্রেপ্তার করছে না পুলিশ। আমরা আসামির গ্রেপ্তার এবং ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই, সেই জন্য এখনো রিফাতের লাশ দাফন করা হয়নি| মামলা নেওয়ার দাবি ও আসামিকে গ্রেপ্তার করার জন্য কাল রাতে র‍্যাব ১-এর দপ্তরের সামনেও বিক্ষোভ করা হয় বলে জানান তিনি।  বিক্ষোভের মুখে পরে দক্ষিণখান থানা রাত ১২টার দিকে মামলা নেয়।

ঘটনার বিষয়ে জানতে দক্ষিণখান থানার ওসি তপন চন্দ্র সাহাকে একাধিকবার ফোন ও এসএমএস করলেও তিনি ফোন ধরেননি, এসএমএসের জবাব দেননি।

দুপুরে রাজলক্ষ্মী মোড়ের কাছে ইউলুপে ওই অবরোধের কারণে দুই দিকে আটকা পড়ে শতাধিক যানবাহন।