সাতক্ষীরা মাতাল কর্ণাটকের যক্ষগানের দল

Looks like you've blocked notifications!

মাথায় শিরোস্ত্রাণ, দেহে জমকালো পোশাক আর নানা রঙে রঞ্জিত মুখমণ্ডল। অপরূপ এই অঙ্গসজ্জা নিয়ে দরাজ মিষ্টকণ্ঠে যক্ষগান ও নাচ দিয়ে সাতক্ষীরা মাতালেন ভারতের কর্ণাটকের শিল্পীরা।

মঞ্চের পেছনে থাকা সুরেলা যন্ত্রী ও গায়ক দল আর সমানে নাচ ও অভিনয় এই দিয়ে কর্ণাটকের শিল্পীদের শারদীয় পরিবেশনা মুগ্ধ করেছে সাতক্ষীরাবাসীকে। লোকশিল্পরূপের শতাব্দীপ্রাচীন ইতিহাস নিয়ে তারা অভিনয় করেছে দুই মহাকাব্যের অংশবিশেষ।

বুধবার রাতে ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠান উপভোগ করতে দর্শক-শ্রোতার ভিড়ে টইটম্বুর হয়ে উঠেছিল সাতক্ষীরা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তন। মহাকাব্য রামায়ণ ও মহাভারতের পৌরাণিক কাহিনী অবলম্বনে নাট্যগীতি পরিবেশন করলেন তাঁরা। মন্ত্রমুগ্ধের মতো লোকনাট্য নৃত্যে সংলাপে মাতোয়ারা হয়ে ওঠেন সংস্কৃতিপ্রেমীরা। ঢোল, মৃদঙ্গ ও মন্দিরাযোগে মঞ্চে বসে গেয়েছেন নগরাজ রামচন্দ্র যোশী ও তাঁর সঙ্গীরা। আর সম্মুখে নাচ দিয়ে সুরের জাদু ছড়ালেন শিল্পীরা। তাঁদের পরিবেশনায় ফুটে ওঠে শিল্পকলার অনবদ্য রূপ।

এর আগে ভারতীয় হাইকমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায় কর্ণাটকের যক্ষগান শিল্পকলার পরিচিতি তুলে ধরেন। জেলা প্রশাসক মো. নাজমুল আহসান ভারতীয় শিল্পীদের স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য দেন। সংস্কৃতি বিনিময়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের বন্ধুত্ব আরো দৃঢ় হয়ে উঠবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ।

যক্ষগান দলনেতা নগরাজ রামচন্দ্র যোশীর নেতৃত্বে লোকনাট্য নৃত্যগীতি পরিবেশনায় আরো অংশ নেন সতীশ গণপতি হেজ, মঞ্জুনাথ পরমেশ্বর হেজ, বিগনেশ্বর দৈব গোবদা, নরেন্দ্র বিশ্বেশ্বর হেজ, কৃষ্ণ চিক্ক্য পুজারী, আসকার নগরাজ যোশী ও অমর নগরাজ যোশী।

একপর্যায়ে নৃত্যগীতির মধ্য দিয়ে ভরত ধর্মাঙ্গদ শীর্ষক বীরত্ব কাহিনী তুলে ধরেন শিল্পীরা। রাজা ভরত ও যুবরাজ ধর্মাঙ্গদের মুখোমুখি যুদ্ধের পর শান্তি প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসা মহর্ষি নারদের পরামর্শক্রমে ভরত তাঁর কন্যার সঙ্গে ধর্মাঙ্গদের বিবাহের প্রস্তাব দেন। এভাবে দুই রাজার মধ্যে মৈত্রী সম্পর্ক স্থাপিত হয়। একপর্যায়ে ধর্মাঙ্গদ পাতালপুরী আক্রমণ করে পাতালপুরীর সম্রাট মহাবলীর সম্মুখীন হন। এবার বিষ্ণু এসে তাদের মাঝখানে দাঁড়ান। মহাবলী তাঁর কন্যাকে ধর্মাঙ্গদের হাতে সমর্পণের প্রস্তাব দিন এবং রাজকুমার তা সানন্দে গ্রহণ করলেন। এভাবে ধর্মাঙ্গদ বিশ্ববাসীকে তাঁর শক্তি প্রদর্শন করে যুদ্ধাভিযান শেষ করলেন।