ছুটির সকালে বাস-মাহেন্দ্রর সংঘর্ষে সাতজন নিহত

Looks like you've blocked notifications!
বরিশাল সদর উপজেলায় আজ শুক্রবার সকালে যাত্রীবাহী বাস ও স্থানীয় থ্রি-হুইলার পরিবহন মাহেন্দ্রর মুখোমুখি সংঘর্ষে কলেজছাত্রসহ সাতজন নিহত হয়েছেন। শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বজনদের আহাজারি। ছবি : এনটিভি

বরিশাল সদর উপজেলায় যাত্রীবাহী বাস ও স্থানীয় থ্রি-হুইলার পরিবহন মাহেন্দ্রর মুখোমুখি সংঘর্ষে কলেজছাত্রসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো পাঁচজন।  

আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার বরিশাল-বানারীপাড়া সড়কের গরিয়ারপাড়ের তেঁতুলতলা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে এনটিভি অনলাইনকে নিশ্চিত করেছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রহমান মুকুল।

নিহতরা হলেন, ঝালকাঠির বাসিন্দা ও বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন কলেজের (বিএম) স্নাতকোত্তর শ্রেণির গণিত বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী শীলা হালদার (২৪), বাকেরগঞ্জের বাসিন্দা ইউনুস সিকদারের ছেলে ও নগরীর নথুল্লাবাদ এলাকার বাসিন্দা রং মিস্ত্রি মানিক সিকদার (৪০), নগরীর ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাশিপুর এলাকার এনছাফ আলীর ছেলে অটোরিকশাচালক মো. খোকন মিয়া (৩৫), বরিশালের কাশিপুরের গণপাড়া এলাকার ইদ্রিস খানের ছেলে দুর্ঘটনা কবলিত মাহিন্দ্রা চালক মো. সোহেল (২৫), বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশার দুর্গাসাগর এলাকার মোখলেস হাওলাদারের স্ত্রী পারভীন বেগম (৩৫), তাঁর ছেলে তাইয়ুম (৭) ও মাধবপাশা এলাকার মেহেরুন্নেছা (৫০)।

বরিশাল সদর উপজেলায় আজ শুক্রবার সকালে যাত্রীবাহী বাস ও স্থানীয় থ্রি-হুইলার পরিবহন মাহেন্দ্রর মুখোমুখি সংঘর্ষে কলেজছাত্রসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বজনদের আহাজারি। ছবি : এনটিভি

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের বরিশালের স্টেশন অফিসার ইউনুস আলী গণমাধ্যমকে বলেন, মাহেন্দ্রটি যাত্রী নিয়ে ব‌রিশাল থে‌কে বানারীপাড়ার দি‌কে যা‌চ্ছিল। আর ‘দুর্জয় পরিবহনের’ বাসটি স্বরূপকাঠি থেকে বরিশালের দিকে আসছিল। পথে গড়িয়ারপাড়ের তেঁতুলতলা এলাকায় তাদের মধ্যে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

এতে মাহেন্দ্রটি দুমড়েমুচড়ে রাস্তার পাশে পড়ে গেলে ঘটনাস্থলেই কলেজছাত্রী শীলা মারা যান। আহতদের উদ্ধার করে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক চারজনকে মৃত ঘোষণা করেন। একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরে মারা যান।’

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে যান। এসময় জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক মানিক ও খোকনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এছাড়া চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মাহিন্দ্রা চালক সোহেল, মাহিন্দ্রার যাত্রী মেহেরুন্নেছা ও মোসা. পারভীন বেগম ও তার ছেলে শিশু তাইয়ুম। এছাড়া আহতদের মধ্যে নিহত মেহেরুন্নেছার নাতি আব্দুল্লাহ (৭), সুমন (২৫), তন্নি (১৭) ও দুলাল হালদার (৩০) হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এদিকে নিহতদের স্বজনরা বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল  কলেজে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং আহাজারি করেন। বিক্ষুদ্ধ স্বজনরা জানান, দুর্ঘটনার পর বাসটি নিয়ে ওই চালক সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ায় নিহতের সংখ্যা আরো বেড়েছে। এই ঘটনায় বাস চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তাঁরা।

নিহত শীলা হালদারের মা জানান, গীতা রানি হালদার জানান শীলা এসএসসি, এইচএসসিতে জিপিএ ফাইভ পাওয়া মেয়ে। অনার্সেও ভালো রেজাল্ট করেছিল। ইচ্ছা ছিল আগামী ২৫ মার্চ শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিবেন। কিন্তু তা আর হলো না।

বিমানবন্দর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহমান মুকুল জানান, বাসচালককে আটক করা যায়নি। দুর্ঘটনা কবলিত বাস ও মাহিন্দ্রা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। এদিকে নিহতদের সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।