গোপালগঞ্জে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার, কাল ডিসির সঙ্গে আলোচনা
গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া ও গোপালগঞ্জ-টেকেরেহাট আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। আজ মঙ্গলবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে সড়ক থেকে সরে দাঁড়ান তাঁরা।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচনে ভোট গণনায় অনিয়মের অভিযোগে পরাজিত দুই স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে আবার সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে অবরোধকারীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় এক পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ ও অন্তত নয়জন আহত হন।
জানা যায়, সদর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় মুরুব্বিরা আগামীকাল বুধবার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোখলেসুর রহমানের সঙ্গে দেখা করবেন। তাঁর বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলবেন।
মঙ্গলবার রাতে এ কথা জানান সদর উপজেলার মাঝিগাতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মনোয়ার হোসেন (মন্টু)। তিনি জানান, আগামীকাল বুধবার তিনিসহ পাঁচটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাবেন। সঙ্গে বেশ কয়েকজন স্থানীয় মুরুব্বি যাবেন। নির্বাচনে অনিয়ম সংক্রান্ত বিষয়গুলো জেলা প্রশাসকের কাছে তুলে ধরা হবে।
গত রোববার পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ভোট গ্রহণ শেষে গোপালগঞ্জ সদরে চেয়ারম্যান হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ লুৎফার রহমান বাচ্চু নির্বাচিত হন। এরপর থেকেই পরাজিত অন্য স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষ থেকে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তোলা হতে থাকে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, আজ সকাল থেকে সদর উপজেলা নির্বাচনে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহামুদ হোসেন মোল্লার সমর্থকরা গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া সড়কের বিভিন্নস্থানে গাছ কেটে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। সড়কে টায়ার জ্বালানোয় ও গাছের গুঁড়ি ফেলে রাখায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। যানজটে আটকা পড়ে অসংখ্য গাড়ি।
পরে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি ঘটনাস্থলে গিয়ে আন্দোলনকারীদের সরানোর চেষ্টা করলে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। উপায় না দেখে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ ২১০টি গুলি, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় বাদল নামের সদর থানার এক পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ হন।
এদিকে প্রথম পর্যায়ের বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনলেও বিক্ষোভকারীরা সড়কের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ চালিয়ে যেতে থাকেন। পরবর্তীতে বিক্ষোভকারীরা ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের বেদগ্রাম এলাকাতেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। সে সময় মহাসড়কের দুইপাশে দূরপাল্লার বাসসহ বেশ কিছু যানবাহন আটকা পড়ে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেখান গিয়ে বেরিকেড তুলে দিলে মহাসড়কে আবারও যানবাহন চলতে শুরু করে।
অন্যদিকে একই সময়ে আরেক পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী এস এম শাহ আলমের হাজার হাজার সমর্থক সদর উপজেলার উলপুর থেকে বৌলতলী পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার সড়ক অবরোধ করে রাখে। তারাও রাস্তার পাশের অসংখ্য বড় গাছ কেটে বেরিকেড দেয় এবং টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে।
এর আগেও গতকাল সোমবার রাত ৮টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এ দুই সড়কের চারটি স্থানে মাহামুদ হোসেন মোল্লা ও এস এম শাহ আলমের সমর্থকরা সড়ক অবরোধ করে রাখে।