মাছের সঙ্গে পুড়ে গেছে জামাল-কামালের স্বপ্নও

Looks like you've blocked notifications!
রাজধানী গুলশান-১ এর ডিএনসিসি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে পোড়া মাছ দেখছে লোকজন। ছবি : মোহাম্মদ ইব্রাহিম

৫৫ কেজি ওজনের বাঘাইড়, ২০ কেজির কোরাল, বিশাল বিশাল বোয়াল, আইড়সহ বিভিন্ন নাম ও জাতের সামুদ্রিক মাছ।

রাজধানী গুলশান-১ এর ডিএনসিসি মার্কেটের প্রবেশ পথে দুই ধারে ১৫টি বড় বড় ডিপ ফ্রিজে ঠাসা ছিলো মাছগুলো। আজ শনিবার ভোরের আগুনে সবগুলো মাছ পুড়ে বার বি কিউ হয়ে গেছে। ফ্রিজগুলোও পুড়ে অঙ্গার হয়ে গেছে। ফ্রিজের ভেতরে জমা বরফ গলে মাছগুলো কিভাবে পুড়ে গেলো তা নিয়েও গবেষণা করছেন কেউ কেউ। তবে ঠায় দাঁড়িয়ে একপলকে তাকিয়ে ছিলেন দুই ভাই জামাল উদ্দিন ও কামাল উদ্দিন।

বড় মাছের যোগানদাতা হিসেবে জামাল উদ্দিন ও কামাল উদ্দিনের নামডাক গুলশান ও বনানীসহ অভিজাত এলাকার বাসিন্দাদের মুখে মুখেই ছিল। বিয়ে-সাদিসহ নানান সামাজিক অনুষ্ঠানে তাঁরা মাছ সরবরাহ করে আসছেন বেশ কয়েক বছর ধরে। সুনামও তাঁদের কম নয়। এমনটাই জানালেন তাঁদের দোকানের কর্মচারী রাসেল আহমেদ।

রাজধানী গুলশান-১ এর ডিএনসিসি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে পোড়া মাছ। ছবি : মোহাম্মদ ইব্রাহিম

আজ শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ডিএনসিসি মার্কেটের কাঁচাবাজার অংশে আগুনের সূত্রপাত হয়। প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, পুরো মার্কেটটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ডিএনসিসি কাঁচাবাজার অংশে মূলত বিভিন্ন মুদি ও খাদ্য সামগ্রীর দোকান ছিল।

গুলশান-১ ডিএনসিসি কাঁচাবাজার সমবায় সমিতির সহসভাপতি জামান প্রধান সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাজারে ২১১টি দোকান ছিল এবং সবগুলো দোকানই আগুনে পুড়ে গেছে।’

রাজধানী গুলশান-১ এর ডিএনসিসি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে মাছ রাখার ডিপ ফ্রিজ পুড়ে গেছে। ছবি : মোহাম্মদ ইব্রাহিম

পুরো মার্কেটটি ঘুরে দেখা গেছে, একটি দোকানও আগুন থেকে রেহাই পায়নি। প্রতিটি দোকানের মালিকই কর্মচারীদের নিয়ে সামান্য কিছু হলেও খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন। ক্যাশ বাক্সগুলোও পুড়ে গেছে।

সি ফিশ লিমিটেড নামের দোকানে রাখা ছিলো বড় বড় সাইজের ১৫টি ডিপ ফ্রিজ। এগুলোর সবটিতেই সামুদ্রিক নানান জাতের মাছে ভরা ছিল। সকালেই মাছগুলো বিক্রি করতেন কর্মচারীরা। ফ্রিজগুলোতে শুধু মাছই ছিল ২০ লাখ টাকার।

সি ফিশ লিমিটেডের পাশের দোকানটি তপন আচার্যের। তিনিও এ মার্কেটের একজন বড় মাছ বিক্রেতা। সামুদ্রিক মাছসহ নদ-নদীর বড় বড় সাইজের মাছ সংগ্রহ করে তিনি এখানে এনে বিক্রি করেন। সাধারণত আগের দিন রাতে মাছ আসে। এ মাছ তাঁরা ফ্রিজে রেখে পরদিন ভোরবেলায় বিক্রি করেন। তাঁর আটটি ফ্রিজসহ সব মাছই পুড়ে গেছে। ডিপে বরফ জমা মাছ কিভাবে পুড়ে গেলো তা তাঁরও মাথায় আসছে না। দোকান ও ব্যবসা হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন তিনিও।

রাজধানী গুলশান-১ এর ডিএনসিসি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে পোড়া মাছ। ছবি : মোহাম্মদ ইব্রাহিম