চার দিনের সফরে ঢাকায় ভুটানের প্রধানমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
চার দিনের সফরে আজ শুক্রবার সকালে ঢাকা পৌঁছেছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং। ছবি : সংগৃহীত

ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে আজ শুক্রবার সকালে তিন দিনের সরকারি সফরে বাংলাদেশে এলে তাঁকে লালগালিচা সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।

রয়্যাল ভুটান এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ বিমান (ড্রুক এয়ার) ভুটানের প্রধানমন্ত্রী, তাঁর স্ত্রী এবং সফরসঙ্গীদের নিয়ে সকাল ৮টা ৮ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

ড. লোটের আগমন উপলক্ষে ১৯ বার তোপধ্বনি ধরা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিভিআইপি লাউঞ্জে স্বাগত জানান। এ সময় ছোট্ট দুটি শিশু ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে ফুলের তোড়া উপহার দেয়।

পরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সদস্যদের গিয়ে গঠিত একটি সুসজ্জিত চৌকস দল ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। এ সময় দুই দেশের জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। পরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাঁর মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ এবং উচ্চ দস্থ কর্মকর্তাদের ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।

এ সময় ভুটানের প্রধানমন্ত্রী তাঁর সফরসঙ্গীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিচয় করান।

মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সংশ্লিষ্ট সচিব, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, কূটনৈতিক কোরের ডিন এবং পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বিমানবন্দরে উষ্ণ অভ্যর্থনা পর্ব শেষে একটি সুশোভিত মোটর শোভাযাত্রা সহযোগে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে নিয়ে যাওয়া হয়। সফরকালে তিনি সেখানেই অবস্থান করবেন। ডা. লোটে সাভারে বীর মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে রক্ষিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করে বাংলাদেশে তাঁর সফর আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করবেন।

সফরের প্রথম দিন বিকেলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর হোটেলকক্ষে সাক্ষাৎ করবেন।

পরে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) নেতৃবৃন্দের সঙ্গে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে একটি ব্যবসায়িক বৈঠকে অংশ নেবেন।

শনিবার ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর তেজগাঁওয়ের কার্যালয়ে (পিএমও) এক বৈঠকে মিলিত হবেন।

বৈঠকের পর দুটি দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা, অভ্যন্তরীণ কার্গো চলাচল-সংক্রান্ত সহযোগিতা, স্বাস্থ্য এবং কৃষি খাত-সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি বিষয়ে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালিক এবং নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর এর পর ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর হোটেলকক্ষে তাঁর সঙ্গে পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করবেন।

পরে সন্ধ্যায় ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

এর পর ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আয়োজিত নৈশভোজে তিনি যোগদান করবেন।

১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন তিনি রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সুরের ধারা আয়োজিত বর্ষবরণের সাংস্কৃতিক আয়োজনে যোগ দেবেন।

একই দিনে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী এবং ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং সেখানকার পুনর্মিলনীতে যোগ দেবেন এবং সেখানে ভাষণ প্রদান করবেন। তিনি সেদিন বিকেলেই রাজধানীতে ফিরলে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

সফরকালীন ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর বিমসটেক সচিবালয় এবং বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জনস পরিদর্শনের কথা রয়েছে। সফর শেষে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ১৫ এপ্রিল সকালে ঢাকা ত্যাগ করবেন।