নুসরাত হত্যার দায় রাজনীতিবিদদের : মির্জা ফখরুল

Looks like you've blocked notifications!
রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে ‘দশম জাতীয় শিশুশিল্পী প্রতিযোগিতা শাপলাকুঁড়ি’ উপলক্ষে পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : এনটিভি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার উত্তর দিতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এর দায় রাজনীতিবিদদেরই নিতে হবে।’

আজ বুধবার সকালে রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে ‘দশম জাতীয় শিশুশিল্পী প্রতিযোগিতা শাপলাকুঁড়ি’ উপলক্ষে পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল। জিয়া শিশু একাডেমি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

এ সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা কেন এই হিংসা, প্রতিহিংসা, ক্ষোভ, হত্যাযজ্ঞের মধ্যে নেমে পড়েছি? কেন আমাদের রাফিকে এভাবে নির্যাতিত হয়ে মরতে হয়? কেন? আমি জানি না। এই উত্তর আমাদের রাজনীতিবিদদেরই দেওয়ার কথা। কিন্তু আমরা ব্যর্থ হয়েছি। সুন্দর বাংলাদেশ দিতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি।’

বিএনপির মহাসচিব শিশুদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা ব্যর্থ হয়েছি তোমাদের নিরাপত্তা দিতে। তারপরও আমি স্বপ্ন দেখি। আমি স্বপ্ন দেখি, এই বাংলাদেশ একটা সুন্দর ও সমৃদ্ধির দেশ হবে। আমি স্বপ্ন দেখি, এই শিশুরা নির্ভয়ে বিচরণ করবে। কোথাও তাদের ওপরে আঘাত আসবে না। আমাদের মেয়েদের পুড়িয়ে মারবে না। এই স্বপ্নগুলো আমরা দেখি।’

নিজের শৈশবের স্মৃতিচারণ করে ফখরুল বলেন, ‘প্রতিমুহূর্তে আমরা যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছি। যন্ত্রের কাছে চলে যাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তে আমরা প্রযুক্তির কাছে হেরে যাচ্ছি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা ১৯৭১ সালে একটা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। কেন করেছিলাম? আমরা সবাই বইয়ে পড়ি, স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছিলাম, তাই না? কিন্তু সেই স্বাধীনতা যুদ্ধ কেন করেছিলাম? তখন আমরা যে দেশে বাস করছিলাম, সেই দেশটা নিজেদের দেশ বলে মনে হচ্ছিল না। মনে হচ্ছিল, কেউ বুঝি আমাদের বুকের ওপর চেপে বসে আছে। আমরা নিশ্বাস নিতে পারতাম না। এটা থেকে আমরা বের হয়ে আসতে চেয়েছিলাম। সেই কারণে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম।’

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরো বলেন, “মুক্তিযুদ্ধে আমাদের যাঁরা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তাঁরা অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় মানুষ। কিন্তু যে মানুষটি স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং নিজেই অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, সেই মানুষটির নাম জিয়াউর রহমান। তাঁর নামেই এই একাডেমির নামকরণ করা হয়েছে ‘জিয়া শিশু একাডেমি’।”

মির্জা ফখরুল শিশুদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা জিয়াউর রহমানের নামটা শুনেছ, কিন্তু তোমরা জানো না। কারণ, তোমাদের বই থেকে আস্তে আস্তে নামটা মুছে দেওয়া হচ্ছে! কিন্তু নামটা বারবার আমরা বলতে চাই। কারণ যে মানুষটি স্বাধীন-মুক্ত বাতাসের স্বপ্ন দেখিয়েছেন। এই কথাটি আজকে ভুলে গেলে চলবে না।’

আয়োজক সংগঠনের মহাপরিচালক এম হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য (ভিসি) ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, দশম জাতীয় শিশু শিল্পী প্রতিযোগিতার বিচারক চলচ্চিত্রকার ছটকু আহমেদ, অভিনেত্রী রিনা খান, শিল্পী শফি মণ্ডল, শিল্পী জিনাত রেহানা প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে আবৃত্তি, অভিনয়, সংগীত ও নৃত্যের ১৩টি একক ও তিনটি দলীয় বিষয়ে ক-খ বিভাগে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান পাওয়া ৮৫ জন খুদে শিল্পী ‘শাপলাকুঁড়ি-২০১৮’ পুরস্কার ও সনদ গ্রহণ করে। পরে তাদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।