২২ বছর পর খালাস পেলেন ফজলু মিয়া

Looks like you've blocked notifications!
পাগল আইনে করা মামলায় খালাস পেয়ে সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে আজ মঙ্গলবার বের হচ্ছেন ফজলু মিয়া। ছবি : এনটিভি

সিলেটে বিনা বিচারে ২২ বছর কারাগারে থাকা ফজলু মিয়ার খালাসের আবেদন গ্রহণ করেছেন আদালত। এনটিভিতে সংবাদ প্রচারের পর ফজলু মিয়া জামিনে বের হয়েছিলেন। আজ মঙ্গলবার পূর্বনির্ধারিত তারিখে বেলা সাড়ে ১১টায় সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম জহুরুল হক চৌধুরীর আদালতে খালাসের আবেদন করেন ফজলুর নিযুক্ত আইনজীবী জ্যোৎস্না ইসলাম।

urgentPhoto

অ্যাডভোকেট জ্যোৎস্না ইসলাম বলেন, ‘ফজলু মিয়া সুস্থ বলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সার্টিফিকেট দিয়েছেন। সে অনুযায়ী আমরা পাগল আইনে করা মামলা থেকে ফজলুর অব্যাহতি চেয়েছি।’ 

এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটর সৈয়দ শামীম আহমেদ।

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, ‘পাগল আইনের ৩৪ ধারায় ফজলুর অব্যাহতির আবেদন করা হলে বিচারক তা গ্রহণ করেছেন। এখন থেকে ফজলু মুক্ত।’

জিম্মাদার কামাল উদ্দিন রাসেল বলেন, ফজলু মিয়াকে অনেকে বৃদ্ধাশ্রমে নিতে চাইছেন। কিন্তু আদালতের হাজিরা থাকায় দেওয়া হচ্ছে না। বৃদ্ধাশ্রমে গেলে ফজলু নিরাপদ ও সুন্দরভাবে জীবন কাটাতে পারবেন, এমনটা আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

এ সময় কামাল উদ্দিন রাসেল বলেন, ফজলুর পৈতৃক সম্পত্তি থেকে থাকলে তা উদ্ধারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি চেয়ারম্যান কার্যত পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছেন। পাশাপাশি ফজলুর গ্রামের মানুষও তাঁর সঙ্গে থাকবেন।

১৯৯৩ সালের ১১ জুলাই সিলেটের আদালতপাড়া থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে ৫৪ ধারায় আটক করা হয়েছিল ফজলু মিয়াকে। এর পর পাগল আইনে তাঁর নামে মামলা করা হয়।

তবে ২০০২ সালে ফজলুকে  কারাগার থেকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। এই আদেশের পরও কেটে যায় ১৩টি বছর। কিন্তু তারপরও কারা ফটক পার হতে পারেননি ফজলু।

এরপর বিনা বিচারে কারাগারে থাকা ফজলু মিয়াকে ছাড়িয়ে আনতে ২০০৫ সালে হাইকোর্টে একটি রিট করে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র। তারপরও কারাগারেই থাকতে হয় ফজলুকে।

আদালতের চোখে কোনো অপরাধ না করেও এ পর্যন্ত অন্তত ১৯৭ বার আদালতে হাজিরা দিতে হয়েছিল ফজলু মিয়াকে। সবশেষ এনটিভিতে প্রতিবেদন প্রচারের পর বিষয়টি সবার দৃষ্টিতে আসে। গত ১৪ অক্টোবর তাঁর ১৯৮তম হাজিরার দিন বেলা ১১টায় সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম জহুরুল হক চৌধুরী দক্ষিণ সুরমা উপজেলার তেতলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ও ফজলুর সহপাঠী কামাল উদ্দিন রাসেলের জিম্মায় জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। পরদিন ১৫ অক্টোবর রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনের নেতা ও ফজলুর গ্রামবাসী তাঁকে জেলগেটে সংবর্ধনা দেন।