ব্রুনাইয়ের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিনদিনের সরকারি সফরে আজ সকালে ব্রুনাইয়ের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন। ব্রুনাই দারুসসালামের সুলতান হাজি হাসানাল বলকিয়ার আমন্ত্রণে তিনি এ সফর করছেন।

প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফর সঙ্গীদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বিশেষ ফ্লাইট রোববার সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ব্রুনাইর উদ্দেশে যাত্রা করে।

বিমানটি স্থানীয় সময় দুপুর পৌনে ৩টায় ব্রুনাইয়ের রাজধানী বন্দরসেরি বেগাওয়ানে ব্রুনাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবে। ব্রুনাইয়ের যুবরাজ হাজি আল-মাহতাদী বিল্লাহ বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবেন।

বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রধানমন্ত্রীকে মোটর শোভাযাত্রা সহকারে ইম্পায়ার হোটেল অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবে নেওয়া হবে। সফরকালে তিনি এই হোটেলে অবস্থান করবেন। সফরের প্রথম দিন প্রধানমন্ত্রী হোটেলটির ইন্দেরা সামুদেরা বলরুমে ব্রুনাই প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজিত সংবর্ধনায় যোগ দেবেন। একই দিন তিনি ব্রুনাইয়ে বাংলাদেশের হাইকমিশনার আয়োজিত নৈশভোজে যোগ দেবেন।

আগামীকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী ব্রুনাইয়ের সুলতান বলকিয়ার সরকারি বাসভবন ইস্তানা নূরুল ইমানে চেরাদি লায়লা কেনচানায় সুলতান ও রাজকীয় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হবেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ইস্তানা নূরুল ইমামে বায়তুল মেশ্যুরায় সুলতানের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠক শেষে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে।

বিকেলে প্রধানমন্ত্রী ইস্পায়ার হোটেল অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবে ব্রুনাই ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে যোগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী জামে আসর মসজিদ পরিদর্শন এবং এ মসজিদে আসরের নামাজ আদায় করবেন।

শেখ হাসিনা সুলতান আয়োজিত তাঁর সরকারি বাসভবনে ভোজসভায় যোগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার সকালে ব্রুনাইয়ের রাজধানীর জালান কেবাংসানের কূটনৈতিক জোনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের নতুন চ্যান্সেরি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। পরে তিনি রয়েল রেজালিয়া জাদুঘর পরিদর্শন করবেন।

শেখ হাসিনা স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় ব্রুনাই থেকে যাত্রা করে সন্ধ্যায় ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন। সফরকালে বাংলাদেশ বিভিন্ন খাতে ব্রুনাইয়ের সঙ্গে সাতটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করবে।

এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, আমরা এরই মধ্যে বিভিন্ন সেক্টরে ছয়টি এমওইউ চূড়ান্ত করেছি। বাকি একটি এমওইউ বিবেচনাধীন রয়েছে। আমরা বাংলাদেশে ব্রুনাইয়ের বিনিয়োগ আশ্বাস পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী।

চূড়ান্ত তালিকায় এমওইউগুলো হচ্ছে : কৃষি, মৎস্য, পশু সম্পদ, যুব ও ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও জ্বালানি সেক্টর সহায়তা।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক জোরদারের অংশ হিসেবে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এই সফর খুবই সফল হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এই সফর দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং জ্বালানি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, কৃষি, খাদ্য, আকাশ পথে যোগাযোগ, মানবসম্পদ উন্নয়ন, পর্যটন এবং প্রযুক্তি সেক্টরে সহযোগিতা আরো বৃদ্ধি করবে। ব্রুনাই এরই মধ্যে বাংলাদেশে বিভিন্ন সেক্টর বিশেষ করে কৃষি ও জ্বালানি সেক্টরে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ব্রুনাই। দেশটি ওআইসি এবং আসিয়ানের সদস্য। সফরকালে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদে প্রত্যাবাসনের বিষয়টি নিয়ে ব্রুনাইয়ের সঙ্গে আলোচনা হবে। তিনি বলেন, আমরা যেখানেই যাচ্ছি, আলোচনায় রোহিঙ্গা ইস্যুটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। ব্রুনাই আসিয়ানের সদস্য হওয়ায় এই সফরেও বিষয়টি অধিক গুরুত্ব পাবে।

তেল ও গ্যাস সমৃদ্ধ ব্রুনাই বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ। পৃথক দুই অঞ্চল নিয়ে গঠিত ব্রুনাইয়ের মোট আয়তন হচ্ছে ৫৭৬৫ বর্গকিলোমিটার। এর দক্ষিণ চীন সাগরের পাশে রয়েছে ১৬১ কিলোমিটার উপকূল এবং মালয়েশিয়ার সঙ্গে রয়েছে ৩৮১ কিলোমিটার সীমান্ত।